এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ নভেম্বর : বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে ‘ডিয়ার লটারি’র রমরমা নিয়ে মুখ খুলে আসছেন। আজ শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে একটি অডিও রেকর্ডিং শেয়ার করে একটা বড়সড় পোস্ট লিখেছেন । ওই অডিয় রেকর্ডিংয়ে জনৈক ‘নাগরাজ’ নামে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা গেছে,’জিএসটিতে আমরা নম্বর ওয়ান । পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাসে ৪৩০ কোটি টাকা জিএসটি জমা দিচ্ছি । প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ কোটি টাকা জিএসটি । সেল বেশি হচ্ছে বলেই এত জিএসটি দিতে পারছি । আজকের তারিখে আমরাই সবচেয়ে ট্যাক্স দাতা ।’
ওই অডিও শেয়ারের পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’সুপরিকল্পিত ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত লটারি ব্যবসা কে পেছনের সারিতে পাঠিয়ে, রাজ্যে ধূমকেতুর মতো উত্থান ঘটানো হয় ‘ডিয়ার লটারি-র’ যা কিনা চিটফান্ড থেকেও আর্থিক ভাবে অনেক বেশি বড় আকারের দুর্নীতি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে সর্বস্বান্ত করার এটি একটি সুপরিকল্পিত এবং সংগঠিত ফাঁদ। সহজ ভাষায় আইনি জুয়া ।’
তিনি লিখেছেন,’গোটা রাজ্যে শহর থেকে গ্রামে আপনি যেদিকেই তাকাবেন বাজার, পাড়ার মোড়ে, প্রত্যন্ত গ্রামের ছাদহীন গুমটি দোকান, প্রায় প্রতিটি বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, সর্বত্র লটারি বিক্রেতাদের দেখতে পাবেন। দেখবেন একটি ছোটো টেবিল আর চেয়ার নিয়ে লটারির টিকিট সাজিয়ে এজেন্টরা বসে আছে। সাধারণ খেটে খাওয়া দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ রাতারাতি কোটিপতি হবার আশায় প্রলোভনে পা দিচ্ছেন এবং তাদের কষ্টার্জিত অর্থে এই লটারি কিনে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। আর সেই অর্থে লাভবান হচ্ছেন দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের এক শ্রেনীর নেতারা। তৃণমূল নেতাদের কালো টাকা সাদা করার পন্থাই হলো ডিয়ার (ভাইপো) লটারি।’
এরপর তিনি লিখেছেন,’নিচের ভয়েস টি এই ডিয়ার লটারির মালিক নাগরাজের। মন দিয়ে শুনুন সে কি বলছে। সে তার লটারির ব্যবসা কে ছড়িয়ে দিতে স্টকিস্ট, সাব-স্টকিস্ট, সেলারের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। এখন সে তার লটারির বিক্রি বাড়াতে টার্গেট ও দিচ্ছে। তার কথা অনুযায়ী সে মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কে ৪৩০ কোটি টাকা ট্যাক্স দেয়। ভাবা যায়? এরাই আবার তৃণমূলের তহবিলে ইলেক্টোরাল (নির্বাচনী) বন্ড এ ৩০০কোটি টাকা দিয়েছে। এই সব টাকাই পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের টাকা। তার কথায় সরকারকে আরো বেশি ট্যাক্স দিতে হবে অর্থাৎ আরো বিক্রি, আরো বেশী বেশী করে সাধারণ মানুষকে মাদকের মতো এই নেশা ধরিয়ে একেবারে সর্বস্বান্ত করা। উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার।
আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ কে প্রতারিত করে তোলা হচ্ছে এই টাকা। কারণ অবিক্রিত টিকিটে পুরষ্কার উঠছে এবং তাতে শাসক দলের প্রভাবশালীদের হাত আছে। এবং এর প্রমাণ সকলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখেছেন বা পড়েছেন।’
সব শেষে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়ে লেখেন,’এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে কাজের অভাব, রুজি রুটির অভাব। বেকারের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় আমি সবাইকে অনুরোধ করব সকলে সচেতন হন, এই অনৈতিক ব্যবসার ফাঁদে পা দেবেন না। নয়তো আপনাদের কষ্টার্জিত টাকায় অন্যরা ফুলেফেঁপে উঠবে আর আপনি সর্বস্বান্ত হবেন।’।