এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,১০ জানুয়ারী : বৃহত্তর বাংলাদেশ গঠন হলো বাংলাদেশের ইসলামী মৌলবাদী সংগঠনগুলি চরম লক্ষ্য । সেই লক্ষ্যে তারা পশ্চিমবঙ্গের উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ব্যাপক হারে মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে দিচ্ছে । শেখ হাসিনার পতনের পর পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে । সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উন্মুক্ত স্থানে কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর কাজ করছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) । কিন্তু তাদের বারবার বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর(বিজিবি) বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এতে বাংলাদেশের ইসলামী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি বৃহত্তর বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে ।
প্রসঙ্গত, বৃহত্তর বাংলাদেশ বা বৃহত্তর বঙ্গ হল একটি তত্ত্ব যা দাবী করে যে বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐতিহাসিক অবিভক্ত বাংলা গঠন করা । যা পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম, সেইসাথে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ ও মিয়ানমারের চিন রাজ্য, রাখাইন রাজ্য (প্রাক্তন আরাকান) পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশের নিজস্ব ভূখণ্ডের অংশ নিয়ে গঠিত হবে। শেখ হাসিনাকে দেশছাড়া করার পর বাংলাদেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিজবুত,জামাত ইসলামী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি বা বিএনপির মত কিছু গোষ্ঠীর জঙ্গিরা বারবার বৃহত্তর বাংলাদেশ গঠনের কথা বলে আসছে । এ কারণে তারা সামরিক শক্তিতে ভারতের থেকে অনেক দুর্বল হলেও ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রীতিমতো উস্কানি দিতে শুরু করেছে । কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে নয়াদিল্লি বাংলাদেশের এই প্রকার শিশুশুলভ আচরণ মুখ বুজে সহ্য করে চলেছে ।
গত সোমবার মালদার কালিয়াচকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম শুকদেবপুরে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া দিতে গেলে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিজিবি বাধা দেয় । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনায় ছড়ায় । ঘটনার কথা চাওড় হতেই শুকদেবপুর গ্রামের প্রচুর সংখ্যক হিন্দু বিএসএফের পাশে এসে দাঁড়ায় । তাদের কারোর হাতে ছিল লাঠি, কারোর হাতে ছিল হাসুয়া । গ্রামবাসীরা “জয় শ্রীরাম”,”বন্দেমাতরম” ও “ভারত মাতা কি জয়” প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ জানায় ।
ফের একই কাজ করতে দেখা গেল বিজিবিকে । মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরের সুখদেবপুর গ্রামে বাংলাদেশের সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া দিতে গেলে রীতিমত উস্কানি দিতে দেখা গেল বিজিবিকে । মালদা জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত ১৭২ কিলোমিটার। সুখদেবপুর গ্রামের ওপারে রয়েছে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকা । স্থলভাগে ১৮ কিলোমিটারে নেই কোনও কাঁটাতার। বৈষ্ণবনগরের সুখদেবপুর গ্রাম লাগোয় সীমান্তের অনেকটা এলাকা এখনো অসুরক্ষিত রয়ে গেছে । ওই খোলা সীমানা দিয়েই বিজিবির ইন্ধনে চলে চোরাকারবার এবং দেদার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশ । যেকারণে সেখানে কাঁটাতার লাগানোর কাজ করছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। কিন্তু বিজিবি কাঁটাতার বসানোর কাজে বাধা দেয়। শুধু তাইই নয়,যুদ্ধকালীন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় বিজিবির মধ্যে । বিজিবি জওয়ানরা ২৫ থেকে ৩০ টা বাঙ্কারে বসে রাইফেল তাক করে গুলি করার হুমকিও দিয়েছে বলে জানা গেছে । মঙ্গলবারের পর বুধবারও ফের উত্তেজনা ছড়ায় বৈষ্ণবনগর সীমান্তে। এই উস্কানির আবহে বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করে বিএসএফ । কিন্তু তাতেও যুদ্ধের উৎকানি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ।।