এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৩ অক্টোবর : রাজ্য রাজনীতিতে লড়াকু ইমেজ, মনমোহিনী ক্ষমতার নিরিখে প্রথম সারিতে রাখা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে । বিধানসভার অধিবেশনে তিনি একাই কার্যত শাসকদলকে ঘোল খাইয়ে ছাড়েন ৷ অন্যদিকে শাসকদলেরও আক্রমণের মুখ থাকে মূলত বিরোধী দলনেতার দিকে । তৃণমূলের প্রকাশ্য সভাতেও ছোটো-বড় নেতাদের নিশানায় থাকেন মূলত বিরোধী দলনেতা । কিন্তু আজ সোমবার শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করতে গিয়ে শালীনতার সমস্ত সীমানা অতিক্রম করে ফেললেন পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা দলের রাজ্য আদিবাসী সেলের চেয়ারম্যান দেবু টুডু। তিনি বিরোধী দলনেতাকে “অসুরের বাচ্চা-দানবের বাচ্চা-কাঁথির ব্যাটা- চোরের ব্যাটা-শিশির অধিকারীর ব্যাটা” বলে রীতিমতো গালাগালি করলেন । সেই সাথে “বেঁধে রাখার” নিদান দিলেন । মঞ্চে উপস্থিত বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অসিত মাল, বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শর্মিলা সরকার, মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার সহ ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্বসহ উপস্থিত কর্মীরা দেবুর এই উত্তেজক ভাষণ শুনে হাততালিতে ফেটে পড়েন ।
বিজেপির মঙ্গলকোট বিধানসভার কনভেনর অলোকতরঙ্গ গোস্বামী তৃণমূলের ওই আদিবাসী নেতার তীব্র নিন্দা করেছেন । তিনি বলেন,’চোর তৃণমূলের কাছে শালীনতা আশা করাটা মুর্খামি । কারন কংগ্রেসের গর্ভজাত এই দলটির সংস্কৃতিই হল অশালীন ৷ তার উপর এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরে এখন ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে । এক কোটির উপর ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ যেতে চলেছে । তাই আসন্ন বিধানসভার ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনে তৃণমূলের ছোট-বড় নেতারা এখন পাগলের প্রলাপ বকছেন ।’
প্রসঙ্গত,একশ দিনের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এরাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে । কেন্দ্রের কাছে একশ দিনের কাজের যথাযথ হিসাব দিতে না পারার কারনে বকেয়া টাকা আটকে রেখে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য বিজেপি । বকেয়া টাকার জন্য তৃণমূলকে প্রায়ই মিটিং মিছিল করতে দেখা যায় । তৃণমূলের সন্দেহ যে শুভেন্দু অধিকারীর ইশারাতেই কেন্দ্র সরকার একশ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে । দেবু টুডুরও বিশ্বাস তাই । সেই কারনে আজ সোমবার মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীর সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করে ফেলেন ।
তিনি বলেন,’এখনও অসুর দানবেরা আছে। গরিব মানুষের একশো দিনের কাজের টাকা মেরে দিয়েছে সেই অসুরের দল। আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। সেই অসুরের বাচ্চা,দানবের বাচ্চা, কাঁথির ব্যাটা, চোরের ব্যাটা, শিশির অধিকারীর ব্যাটা জোর করে টাকা আটকে দিয়েছে। সেই অসুরের বিনাশ চাই আমরা।’
সেই সাথে শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি নেতাদের বেঁধে রাখার নিদান দেন দেবু টুডু৷ তিনি বলেছেন,’ওই চোরের ব্যাটা সারাদিন কুৎসা করছে। অসভ্যতা করছে। কোথাও না কোথাও ওই অসুরের ব্যাটাকে পাবেন। ওকে না পাই ওর বংশধরদের তো পাওয়া যাবে। তখন এই মাথরুন মোড়ে তাঁদের বেঁধে রাখতে হবে। বলতে হবে ‘ আগে একশো দিনের টাকা দে। তারপর বন্দে মাতরম বলবি। মহান ভারত বলবি। মোদিবাবা জিন্দাবাদ বলবি।আগে টাকা ফেরত চাই। টাকা ফেরত না দিলে ঝাণ্ডা ধরতে দেব না। শুভেন্দু অধিকারী এবার ফটাস ডুম হয়ে যাবে।”
তবে এবারের বিধানসভার ফলাফল নিয়ে দেবু টুডুর গলায় ছিল আশঙ্কার সুর । উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’মায়েরা মনে রাখবেন, আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজের টাকা আটকে দিয়েছে। এবার যদি বিধানসভা নির্বাচনে অন্য কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনাদের লক্ষীর ভাণ্ডার ‘বাঙ কানা’ হয়ে যাবে। ওই অসুরের দল আটকে দেবে ।’।

