প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ মার্চ : প্রাণে মেরে দেবার হুমকি দিয়ে দশম শ্রেণীর নাবালিকা ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিল আদালত । বুধবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা আদালতের বিশেষ জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার এই সাজা ঘোষণা করেন । সাজা প্রাপ্তর নাম প্রদ্যুৎ বিশ্বাস । তাঁর বাড়ি কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী থানার নতুন দামপাল গ্রামে । আদালত অভিযুক্তকে এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ায় খুশি নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার । কালনা আদালতের সরকারী আইনজীবী মলয় পাঁজা জানিয়েছেন,২০১৮ সালের ৩০ মে নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার ঘটনা বিষয়ে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযুক্ত প্রদ্যুৎ বিশ্বাস ওই ছাত্রীর প্রতিবেশী । ছাত্রীর বাবা ওই দিন পুলিশকে অভিযোগে জানান , মাস তিনেক আগে তাঁর দশম শ্রেণীতে পড়া মেয়েকে প্রদ্যুৎ বিশ্বাস জোর পূর্বক নিজের দোকানের পিছনে টেনে নিয়ে যায়। এই কাজে প্রদ্যুৎকে সাহায্য করে তাঁর ভাই স্বপন বিশ্বাস।ওই জায়গায় টেনে নিয়ে যাওয়ার পর প্রাণে মেরে দেবার হুমকি দিয়ে প্রদ্যুৎ বিশ্বাস ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এইভাবেই প্রাণে মেরে দেবার হুমকি দিয়ে প্রদ্যুৎ আরো একাধীক দিন ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এরই মধ্যে ছাত্রীর শারীরিক বদল ঘটলে তাঁর অভিভাবকরা তাঁকে ডাক্তারখানায় নিয়ে যান। সেখানেই ছাত্রীর অভিভাবকরা জানতে পারেন তাঁদের মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে । ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁর বাবা মা প্রদ্যুৎ বিশ্বাস ও স্বপন বিশ্বাসের কু- কীর্তির কথা জানতে পারেন ।এর পরেই ছাত্রীর অভিভাবকরা ঘটনা সবিস্তার জানিয়ে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । তার ভিত্তিতে পুলিশ পসকো আইন ও তার ৩৭৯ উপধারায় মামলা রুজু করে প্রদ্যুৎ ও তার ভাই স্বপনকে গ্রেফতার করে । স্বপন বিশ্বাস পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে গেলেও মূল অভিযুক্ত প্রদ্যুৎ বিশ্বাস প্রায় চার বছর জেলে কাটায় । দীর্ঘদিন ধরে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলে । সরকারী আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন ,এই মামলায় ৬ জন ডাক্তার, তদন্তকারী অফিসার সহ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার প্রদ্যুৎ বিশ্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত । এদিন বিচারক প্রদ্যুৎ বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান ।।