এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,০১ আগস্ট : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবাহবিচ্ছিন্না মায়ের সঙ্গে দিনের পর দিন ধরে সহবাস করে আসছিল এক ব্যক্তি । তাকেই বাবা হিসাবেই চিনতো মহিলার কিশোরী মেয়ে । আর সেই পাতানো বাবাই চরম সর্বনাশ করে দিল ১৪ বছরের ওই কিশোরীর । মা-মেয়েকে মেলা দেখাতে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের মধ্যে মাকে গাছে বেঁধে রেখে কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠিল ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে । শুধু তাইই নয়,এরপর নাবালিকাকে দেহ ব্যবসাতেও নামানোর ষড়যন্ত্র করেছিল তার পাতানো বাবা । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার জয়পুর থানা এলাকায় । শেষে নির্যাতিতা কিশোরীর মায়ের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বরকত আলি খাঁ । ধৃত ব্যক্তি জয়পুর থানার হাতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা । সোমবার ধৃতকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয় ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগকারিনীর বাপের বাড়ি মুরলিগঞ্জে । বছর পনেরো আগে জয়পুর থানা এলাকার পুনিশোল গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । মহিলার এক বছর পর তাঁদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বছর দশেক আগে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে নিজের মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন মহিলা । পরে মেয়েকে নিয়ে উত্তরমহল গ্রামে থাকতে শুরু করেন ওই মহিলা । জনমজুরি ও ভিক্ষাবৃত্তি করে অতিকষ্টে মা-মেয়ের দু’জনের সংসার চালান । অন্যদিকে অন্যদিকে হাতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বরকত আলি খাঁ বিবাহিত । তার দুই ছেলেও আছে ।
নির্যাতিতা কিশোরীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ের বর্তমান বয়স ১৩ বছর ৮ মাস । মেয়ের যখন ৪ বছর বয়স তখন থেকেই বরকত আলির সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল । আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল । সংসারের সব দায়িত্ব নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল । নিয়মিত আমার বাড়িতে আসা যাওয়া করত । আমার মেয়ে বরকতকেই বাবা বলে জানতো।’
তাঁর অভিযোগ, ‘আমাকে ও আমার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর বিষ্ণুপুরে কৃষি মেলা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল বরকত । ওইদিন রাতে আমরা সেখানেই ছিলাম । পরের দিন শালতোড়ার জঙ্গলে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বরকত আমাকে কাপড় দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে । তারপর মেয়েকে গভীর জঙ্গলে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে । থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুঁশিয়ারি দেয় । কিন্তু মেয়েকে জোর করে দেহব্যবসায় নামানোর কথা বললে আমি আর থাকতে পারিনি । পুলিশের কাছে সব কথা খুলে বলি ।’
জানা গেছে,গত ৩০ জুলাই বরকত নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে নাবালিকা কিশোরীকে কামারপুকুরের একটি লজে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নির্যাতিতার মা রুখে দাঁড়ান । এরপরই নির্যাতিতার মা জয়পুর থানার এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শেষে রবিবার রাতে হাতবাড়ি গ্রাম থেকে অভিযুক্ত বরকত আলি খাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ । নির্যাতিতা কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, ‘শুধু আমার মেয়ে বা আমার জীবনই নষ্ট করেনি বরকত,সে কলকাতাতেও ৪-৫ জন মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে । আমি চাই ওর ফাঁসি হোক ।’।