এইদিন ওয়েবডেস্ক,মোরাদাবাদ,০৭ মার্চ : উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদে, চারজন মুসলিম যুবক মিলে এক দলিত মেয়েকে অপহরণ করে, দুই মাস ধরে বন্দি করে রাখে এবং বারবার গণধর্ষণ করে। এই সময় কালে, তাকে জোর করে গরু ও মোষের মাংসও খাওয়ানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়,কিশোরীর হাতের ‘ওঁ’ ট্যাটু মুছে ফেলার জন্য, তারা অ্যাসিড ঢেলে হাত পুড়িয়ে দেয়। মেয়ের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অন্যতম অভিযুক্ত সালমানকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি মোরাদাবাদের ভগতপুর থানা এলাকার দৌলপুরী বামনিয়া গ্রামের। সেখানকার একটি দলিত পরিবারের ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারী নিখোঁজ হয়। এরপর মেয়েটির পরিবার তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে, কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মেলেনি। পুলিশের কাছে নিখোঁজ ব্যক্তির অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। তার পরেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর পর সে হঠাৎ করে ২রা মার্চ বাড়িতে পৌঁছায় ।
সেই সময় মেয়েটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সে ঠিকমতো হাঁটতে পারছিল না। তার উপর ঘটে যাওয়া বর্বরতার কাহিনী পরিবারের সদস্যদের হতবাক করে দিয়েছিল। এই বর্বরতার অপরাধীরা আর কেউ নন, একই গ্রামের চার যুবক ছিলেন। তাদের নাম ছিল সালমান, রশিদ, আরিফ এবং জুবের। এরপর, মেয়েটির পরিবার থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে।
ভগতপুর থানার ইনচার্জ সঞ্জয় পাঞ্চাল জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মেয়ের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারী, ১৪ বছর বয়সী এক দলিত মেয়ে তার কাপড় সেলাই করাতে একজন দর্জির কাছে যাচ্ছিল। সেই সময়, সালমান, জুবায়ের, রশিদ এবং আরিফ তাকে একটি গাড়িতে করে অপহরণ করে। পথে তাকে কিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়। যখন সে চোখ খোলে কিশোরীটি নিজেকে একটি ঘরের মধ্যে দেখে । তখন তার শরীরে কোন কাপড় ছিল না। সেখানে, চারজন তাকে বন্দি করে এবং বেশ কয়েকবার গণধর্ষণ করে। এই সময়কালে অভিযুক্ত তাকে ক্ষুধার্ত রেখেছিল। যখনই সে কিছু খেতে চাইত, তারা তাকে গরু ও মোষেত মাংস দিত এবং বলত, যদি খেতে চাও, তাহলে শুধু এইটা খাও। এই সময়, তার হাতের ওম প্রতীক মুছে ফেলার জন্য,তারা অ্যাসিড দিয়ে তার হাত পুড়িয়ে দেয়।
পুলিশের কাছে নির্যাতিতা কিশোরী বলেছে,সলমন এবং তার বন্ধুরা আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। জ্ঞান ফিরলে খাবার চাইতাম। তারা আমাকে মহিষ এবং গরুর মাংস খেতে দিল। আমি অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে জোর করে গরুর মাংস খাওয়ায় এবং ধর্ষণ করে। সালমান আমার হাতের ওম প্রতীকটিও অ্যাসিড ঢেলে মুছে ফেলেছিল। আর সে আমার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার হুমকিও দেয়। গত দুই মাস ধরে আমাকে ক্রমাগত শারীরিক নির্যাতন করার পর, সালমান গতকাল আমাকে ভোজপুরে ছেড়ে চলে গেছে। আর সে আমাকে হুমকি দিয়েছিল যে, যদি তুই বাড়ির ঠিকানা বলিস, তাহলে সে আমাকে আর আমার মাসিকে অপহরণ করবে। আর আমি তোর কাকা আর ভাইকে মেরে ফেলব। আর সালমান আমাকে বলত যে এই ইসলামিক জিহাদের জন্য আমি প্রচুর অর্থ পাই। তুই তো ছোট একটা মেয়ে, আমি জানি না তোর মতো কত মেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এটা করলে আমরা জন্নত(স্বর্গ) পাবো।
জিহাদিরা তাকে সেখান থেকে ভোজপুর এলাকায় নিয়ে যায় এবং অন্য একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। এখানে, সুযোগ দেখে, ভুক্তভোগী কোনওভাবে পালিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে যায়। এই সব প্রায় ২ মাস ধরে চলতে থাকে। বাড়িতে পৌঁছানোর পর, মেয়েটি তার পরিবারকে এই ঘটনাটি জানায়। এরপর পরিবারের সদস্যরা ভগতপুর থানায় ৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো এবং এসসি/এসটি আইনে মামলা দায়ের করেছে। একজন অভিযুক্ত সলমনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সাথে, বাকি তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাচ্ছে।
এই ঘটনার জেরে গ্রামের পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিন্দু সংগঠনগুলি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। মোরাদাবাদের এসপি রুরাল কুনওয়ার আকাশ সিং বলেছেন যে শীঘ্রই বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। এই ঘটনা সম্পর্কে মন্ত্রী জয়বীর সিং বলেছেন যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।।