এইদিন ওয়েবডেস্ক, ২৭ নভেম্বর: বেশকিছুদিন ধরেই চলছিল টানাপোড়েন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পথেঘাটে দেখতে পাওয়া গিয়েছে “আমরা দাদার অনুগামী”র পোষ্টার, ব্যানার। সিঙ্গুরের সভামঞ্চে প্রকাশ্যে হাজার হাজার অনুগামীদের সামনে ঘোষণা করেছিলেন, “রাজনৈতিক ময়দানে দেখা হবে।” তখন আর কারও বুঝতে বাকি থাকেনি দলের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে তার বুকে।
শুভেন্দু অধিকারী। যিনি বিগত মাসাধিককাল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের রক্তচাপ বাড়িয়ে চলেছিলেন। দলের সাধারণ কর্মীদের কারও মনে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্রোহের উত্তাপ। আবার অনেক কর্মী আশাহত হয়ে তার সমালোচনা করেছেন।
যে কর্মীরা এতদিন তাদের হৃদয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই স্থান দিয়ে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। সেই শুভেন্দু অধিকারী যে আর তৃণমূল কংগ্রেসে মনেপ্রাণে নেই তা এদিন শুক্রবার মন্ত্রীত্ব থেকে তার ইস্তফার পর কারও বুঝতে বাকি নেই।
শুক্রবার সকালেই নিজের সরকারি দেহরক্ষী ত্যাগ করেন শুভেন্দু।তারপর পরিবহন ও জলসম্পদ দফতরের মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা। তারপরেই হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘনিষ্ঠ মহলে খবর শুভেন্দু অধিকারী এরপর দিল্লিযাত্রার পথে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে তার যোগদান শুধু সময়ের অপেক্ষা। এমনটাই খবর ওয়াকিবহাল মহলের।
শুক্রবার দিনভর সোসাল মিডিয়ায় চর্চা শুধু শুভেন্দুর ইস্তফা নিয়ে। বস্তুত আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মুখেই শুভেন্দুর একপ্রকার দলত্যাগ’ দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে হতাশ করেছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার ছাপ সোসালমিডিয়াতেও স্পষ্ট।কয়েকদিন ধরেই শুভেন্দুকে দলে ধরে রাখার জন্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। মধ্যস্থতা করেছিলেন ‘ভোটগুরু’ প্রশান্ত কিশোরও। কিন্তু সেসব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তার এভাবে সরে যাওয়া রাজ্যের শাসকদলকে আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে এটা বিলক্ষণ বুঝছেন দলের সাধারণ কর্মীরাই। কয়েকটি বহুল প্রচারিত সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী শুভেন্দু অধিকারী আগামী দু একদিনের মধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। তাহলে যারা এই কয়েকদিন ধরেই “আমরা দাদার অনুগামী” পোষ্টার হাতে রাজপথে প্রকাশ্যে একপ্রকার বিদ্রোহ করেছিলেন তারাও কি দলে দলে এবার বিজেপিতে যাবেন?” আমরা দাদার অনুগামী” ব্যানারে বিদ্রোহ কি ছিল শাসকদলের রক্তচাপ বাড়িয়ে বিধানসভা ভোটের আগে দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলার ব্লুপ্রিন্ট? এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।