এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ মে : রবিবার রাত সাড়ে ৮ টায় ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূল এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে তান্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Cyclone Remal) । ভারী বৃষ্টিপাত এবং প্রবল ঝড়ো হাওয়ার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । প্লাবিত হয়েছে বাড়িঘর ও কৃষিজমি । বিভিন্ন জায়গায় বহু গাছ উপড়ে পড়েছে এবং ভেঙে গেছে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি । সুন্দরবনের গোসাবা এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবের সময় একজন আহত হয়েছেন। যদিও ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে পশ্চিমবঙ্গের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগর দ্বীপ, সুন্দরবন এবং কাকদ্বীপ থেকে লোকেদের স্থানান্তরিত করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (কেএমসি) কর্তৃপক্ষ বহু উঁচু ও জরাজীর্ণ ভবন থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়েছে।
উপকুল এলাকা ছাড়াও কলকাতার বিবিরবাগান এলাকায় প্রবল বর্ষণে দেয়াল ধসে একজন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে । ঘূর্ণিঝড় রেমাল তান্ডব চালিয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে । ওই সমস্ত এলাকায় মাটির বাড়ির খড়ের ছাউনি, বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং অসংখ্য গাছ উপড়ে ফেলেছে । কলকাতা সংলগ্ন নিচু এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দীঘা, কাকদ্বীপ এবং জয়নগরের মতো এলাকায় হালকা বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া বইছিল , যা আজ সোমবার তীব্র আকার ধারন করে । পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে সোমবার ভোর রাত থেকে টানা বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রবল বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে । ভারতের আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক প্রধান সোমনাথ দত্ত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া আরও বাড়বে ।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য অংশে বিমান, রেল এবং সড়ক পরিবহনে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে কিছু ট্রেন বাতিল করেছে, এবং কলকাতা বিমানবন্দর ২১ ঘন্টার জন্য ফ্লাইট স্থগিত করেছে । এতে ৩৯৪ টি ফ্লাইট প্রভাবিত হয়েছে । শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (NDRF) চৌদ্দটি দল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছিল। পাশাপাশি রাজ্য সরকার ত্রাণসামগ্রী এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য এসডিআরএফ দল প্রস্তুত করেছে এবং তারা কেএমসির সাথে কাজ করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনী মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ত্রাণ (HADR) এবং চিকিৎসা সরবরাহের সাথে সজ্জিত দুটি জাহাজ প্রস্তুত করেছে, দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য স্ট্যান্ডবাইতে বিমান রাখা হয়েছে । প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল এবং বন্যা ত্রাণ দলকেও প্রস্তুত রেখেছে নৌবাহিনী ।।