এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ মে : আকাশ মেঘলা,বঙ্গোপসাগর উত্তাল,আগমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Cyclone Remal)। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর মধ্যরাতেই আছড়ে পরবে এই ঘূর্ণিঝড়, এমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর । খবর অনুযায়ী,কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে আজ থেকে তুমুল ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দমদম বিমানবন্দরে কোনও বিমান ওঠানামা করবে না । ট্রেন চলাচলেও প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা । আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে যে বিকেলের পর থেকেই আবার পরিবর্তন হতে শুরু করবে । কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়া বইবে । উত্তরবঙ্গের রাতে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বর্ষণ শুরু হবে আগামীকাল থেকে। সোমবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে গৌড়বঙ্গে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে মঙ্গলবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে । উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও ভারী বর্ষণ হবে। কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৫০-৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইবে । পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দীঘা সহ বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে সমুদ্রের কাছে না যাওয়ার জন্য মাইকিং করতে শুরু করেছে প্রশাসন।
কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান ও খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী কিরন রিজেজু টুইট করেছেন,’সকাল সাড়ে ৮ টায় ১৪ নম্বর জাতীয় বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় “রেমাল”-এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের জন্য লাল বার্তা । উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর প্রবল ঘূর্ণিঝড় “রেমাল” (“রি-মাল” হিসাবে উচ্চারিত) গত ৬ ঘন্টায় ৭ কিমি বেগে প্রায় উত্তর দিকে সরে গেছে এবং আজকে ২৬ মে, ভারতীয় সময় ৮:৩০ নাগাদ ঘূর্ণিঝড় উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপর ১৯.৮ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৩ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে । যার দূরত্ব খেপুপাড়ার (বাংলাদেশ) ২৬০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে , মংলা (বাংলাদেশ) থেকে ৩১০ কিমি দক্ষিণে, সাগর দ্বীপপুঞ্জের (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে ২৪০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে এবং ক্যানিং (পশ্চিমবঙ্গ) এর দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বের ২৮০ কিমি। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের চারপাশে সর্বোচ্চ স্থিতিশীল বাতাসের গতিবেগ ৯০-১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিরাজ করছে।
কিরন রিজেজু এরপর লিখেছেন,’এটি মোংলা (বাংলাদেশ) এর দক্ষিণ-পশ্চিমে, আজ ২৬ মে -এর মধ্যরাতের মধ্যে একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে সাগর দ্বীপ এবং খেপুপাড়ার মধ্যে প্রায় উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে, আরও তীব্র হতে পারে এবং বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। সর্বোচ্চ ১১০-১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বাতাসের গতিবেগ সহ তীব্র ঘূর্ণিঝড় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে ।’
বর্ধমান জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই কিছু সতকর্তা অবলম্বনের জন্য আবেদন জানিয়েছে । প্রশাসন পরামর্শ দিয়েছে, মোবাইল ফুল চার্জ রাখুন । রেডিও টিভি ও সংবাদপত্রের খবরের দিকে নজরে রাখুন । চর্বি নথিপত্র জল থেকে বাঁচিয়ে রাখুন । আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী,খাদ্য,ওষুধ, জল ও পোশাক প্রস্তুত রাখুন । বাড়িতে কোন ধারালো বস্তু খোলা অবস্থায় রাখতে নিষেধ করা হয়েছে । গৃহপালিত পশুদের মুক্ত অবস্থায় রাখতে বলা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে । বৈদ্যুতিক লাইন ও গ্যাসের মেন সুইচ অফ করে রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন । ঝড়ের সময় তরে জানলা বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে । খড়ের ঘর, মাটির বাড়ি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পাকা বাড়িতে প্রশাসন থাকতে নিষেধ করেছে । বিকল্প কোন উপায় না থাকলে আশ্রয়কেন্দ্র অথবা প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেবার জন্য বলা হয়েছে । ভেঙে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ।।