প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ নভেম্বর : তৃণমূলের চারজন এমলএ- কে জেলে ভরার পাল্টা বিরোধীদের আট জনকে জেলে ভরার হুমকি দিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের সুপ্রিমো । নেত্রীর সুরেই সুর মিলিয়ে ‘বদলার’ রাজনীতির হুংকার ছেড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী । সিপিএমের ’ইনসাফ যাত্রা’ নিয়ে বিদ্বেষ উগরে দিয়ে শনিবার মানগোবিন্দ বলেন,’এবার আর বদল নয়, বদলা চাইবো। আমাদের নেত্রী বলে দিয়েছেন,ওরা আমাদের চারজনকে জেলে ঢুকিয়েছে,আমরা আটজনকে ঢোকাবো। ইনসাফ তো এবার আমরা চাইবো ।’ মানগোবিন্দর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে রবিবার ’ইনসাফ যাত্রা’ থেকে ডিওয়াইএফআই নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন,’পাগলে কি না বলে – ছাগলো কি না খায় ।’
সিপিএমের ’ইনসাফ’ যাত্রার পাল্টা শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর নেতৃত্বে ভাতারের বলগোনা বাজার থেকে ভাতার বাজার পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করা হয়।পদযাত্রা শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানগোবিন্দ অধিকারী সিপিএমের ’ইনসাফ যাত্রা’ কর্মসূচি নিয়ে সুর চড়ান। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,’এবার ইনসাফতো আমরা চাইবো।আমাদের নেত্রী সেদিন বলে দিয়েছেন,আমাদের চারজনকে ঢুকিয়েছে, আমরা আটজনকে ঢোকাবো, বদলা চাইবো’।
বিরোধী বিশেষত সিপিএমকে নিয়ে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বরারই কড়া ভাষায় বক্তব্য রাখেন। তা নিয়ে তাঁর দলকেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় । তবুও বেলাগাম মানগোবিন্দ । তিনি চলেন ও বলেন নিজের মত করে।বাম আমলের একধিক ঘটনা প্রসঙ্গ সামনে এনে মানগোবিন্দ অধিকারী এদিন সিপিএমকে কার্যত তুলোধনা করেন । তিনি বলেন, ’২০১০ সালের ১০ জানুয়ারী বনপাস স্কুলে বোম মেরে তোতন মল্লিককে মারা হয়েছিল ।সেখানে পুলিশের রিপোর্ট কি, আপনারা জানেন না ? পুলিশের রিপোর্ট তোতন মল্লিক নাকি নিজের বোমে নিজে মরেছে । আমাকে ২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারী ভাতার স্কুল ইলেকশনের দিন ভাতারের তেঁতুলতলায় গুলি করা হয়েছিল । পুলিশ গুলিটা ’সিজ’করেছিল । পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, গুলিটা কি ’সিজ’ দেখানো হয়েছে ? উত্তরে ওই পুলিশ অফিসার বলেছিলেন,’বড় সাহেবের নির্দেশে ওটা দেখানো হয়নি’ । এসবের পরেও ওরা কি ইনসাফ চাইবে ? ইনসাফ তো আমরা চাইবো ।’
তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ আধিকারীর এই হুংকারের কড়া জবাব রবিবার শহর বর্ধমানে ‘ইনসাফ যাত্রা’ থেকেই দেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন,’মানুষকে খুন করার বদলা কী হয় ? সংগ্রামী জনতা যখনই রাস্তায় নেমেছে,ওরা পাগল হয়ে যায়। আর পাগলে কী না বলে; ছাগলে কী না খায়। বিধায়ক যদি মানুষের দায়িত্ব না নিয়ে ’বদলা’ নেবার কথা বলেন তাহলে আর কী বলার আছে ! আমরা মানুষের দাবি নিয়ে পথে নেমেছি । আমাদের ওসব নিয়ে ভাবার সময় নেই ।’।