দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৯ জানুয়ারী : বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইনে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং রেলদপ্তরের শুণ্যপদে নিয়োগের দাবিতে আজ বুধবার ভাতার রেলস্টেশনে ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি পালন করল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই । উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা ও সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি । রেলস্টেশন চত্বরে একটা ছোট মালবাহী গাড়ির উপরে চড়ে বক্তব্য রাখেন সিপিএমের নেতানেত্রীরা । মীনাক্ষী কেন্দ্র সরকারকে তোপ দেগে বলেন,’জিসকা কানো মে বাত নেহি পোঁছতা উসকা কানো কি তালা খুলনে কি লিয়ে ধামাকা করনা পরতা ।’ তিনি এও বলেন,’তাহলে মার্চ মাসে আমরা ট্রেন আটকেছি, এরা আমাদের বিরুদ্ধে কেস দিয়েছে । আজকে কেস দেবে । কেসকে কে ভয় খায় ? জেল হ্যায় তো বেল ভি হ্যায় । আজ যাবো ভিতরে,কাল আসবো বাইরে, লড়াই এমনিই চলবে ।’
রেলের শুণ্য পদের বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা এবং রেলকে ধীরে ধীরে বেসরকারিকরন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মীনাক্ষী বলেন,’ভারতবর্ষের রেলটাকে বাপ কা সামান সমঝ কর বেচ দেনা চাহাতে হ্যায়, উসকে খিলাফ হমারা লড়াই হ্যায় ।’ তিনি বলেন,’এরা ওয়েবসাইটে দিয়ে রেখেছে যে ইস্টার্ন জোনে ২২,৫৫৫ টা পদ খালি আছে ৷ কিন্তু গোটা দেশে সাড়ে তিন লাখ পদ আজ খালি । বেহায়া তো গায়ে লেখা থাকে না, কাজে প্রমাণ হয় । এরা এমনি বেহায়া যে নিজেদের ওয়েবসাইটে মিথ্যা কথা বলছে । আসলে রিটায়ারমেন্টের পর ঘরে তালা লাগিয়ে বলছে যে আর তো চাকরি হবে না ।’
মীনাক্ষী মুখার্জির কথায়,’কেন্দ্র সরকার রেলকে মানুষের গলার ফাঁসে পরিণত করেছে ।’ তিনি দাবি করেছেন যে রেলে শূন্য পদের কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে । তার এই দাবির স্বপক্ষে তিনি বলেন, চারদিন আগে শালিমার থেকে একটু আগে চারটে কামরা ট্রাক থেকে পড়ে গেল । কেন পড়ে গেল ? অথচ দেখুন প্রতিদিন এই ট্রেন বাতিল ওই ট্রেন বাতিল । লাইনের নাকি মেরামত হচ্ছে । কিন্তু কারা মেরামত করছে ? হলুদ হলুদ জ্যাকেট পরে অস্থায়ী শ্রমিকরা । তারা আমাদের বাড়ির ছেলে মেয়ে । কেউ এমএ পাস কেউ বিএ পাস ।’
স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৈষম্য নিয়েও সরব হন মীনাক্ষী । তিনি বলেন,’অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন ৬০০০ টাকা করে । কিন্তু স্থায়ী কর্মীরা ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা মাসিক বেতন পাচ্ছে । ওরা কেন ৬০০০ টাকা করে পাবে ?’ মীনাক্ষী মুখার্জির কথায়,’ গোটা ভারতবর্ষের রেললাইন আম্বানি এবং আদানিকে জামাই আদরের মত দিয়ে দিল কেন্দ্র সরকার । এছাড়া রেলের নিজস্ব ১৪ টি প্রেসের ৯ টা বন্ধ করে দিয়েছে । পাঁচটা চালু ছিল কিন্তু সেগুলোর উপরেও খাড়ার ঘা ঝুলছে । সাঁতরাগাছি প্রেস বন্ধ করে দিল । এবারে হাওড়া টাও বন্ধ করে দেবো বলছে।’ রেলের এই সমস্ত বিষয় নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নীরবতা নিয়েও কটাক্ষ করেন মীনাক্ষী । তিনি বলেন, ‘যদি মুখ খোলে তাহলে ভাইপো গপ হয়ে যাবে । ওই কারণে তৃণমূল মুখ খুলবে না শুভেন্দু অধিকারীদের বিরুদ্ধে ।’
বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইনে প্রতি ঘন্টায় এক জোড়া ট্রেন এবং রেলের শূন্যপদে স্বচ্ছতার সঙ্গে পূরণের দাবিতে আজ রেল অবরোধ কর্মসূচি ছিল ডিওয়াইএফআই-এর । ভাতার বাজারে সিপিএমের কার্যালয় থেকে সিপিএমের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিছিল করে রেলস্টেশনে আসেন ধ্রুবজ্যোতি সাহা ও মীনাক্ষী মুখার্জি । তারা দু’দফা সম্বলিত একটা স্মারকলিপি স্টেশন ম্যানেজারের হাতে তুলে দেন । পরে পথসভা ও ট্রেন অবরোধ ককর্মসূচি পালন করেন । মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন,’প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথ দিয়ে যাতায়ত করে ৷ তাই তাদের স্বার্থে জান কবুল লড়াই করবো ।’।