স্টাফ রিপোর্টার,কাটোয়া,২১ জুলাই : কেতুগ্রামে পঞ্চায়েত ভোটের দিন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের উত্তরদাসপাড়ায় সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয় । একই পাড়ার বাসিন্দা পুলক সরকার নামে বছর ৫৬-এর এক প্রৌঢ় ভোট দিতে গিয়ে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান । তাঁকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় । আশঙ্কজনক অবস্থায় ওই প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু ঘটনার দু’দিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । আজ সোমবার নিহত প্রৌঢ়ের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে আসে সিপিএমের একটি প্রতিনিধিদল । ওই দলে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক, পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক সৈয়দ হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ সিপিএমের নেতারা । অচিন্ত্য মল্লিক বলেন,’পুলক সরকার আমাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন । ভোটের দিন তিনি দলের বুথে বসেছিলেন । সেই সময় তাঁর উপর চড়াও হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা । পুলকবাবুকে ইঁট দিয়ে নৃশংসভাবে থেঁতলে মারা হয় ।’ তিনি ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান । যদিও মৃতের স্ত্রী পূর্নিমাদেবী জানান,তাঁর স্বামী কোনও দল করতেন না। সেদিন ভোট দেওয়ার জন্যই বেড়িয়েছিলেন । আর তখনই দু’দলের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান ।
জানা গেছে,মৃত পুলক সরকারের আসামে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন । স্ত্রী ও পূর্নিমা দেবী ও এক নাবালক ছেলে অঙ্কুশকে নিয়ে তাঁর সংসার । পুলকবাবুর দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । ভোটের জন্য দিন চারেক আগে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন । পূর্নিমাদেবী বলেন,’ঘটনার দিন বিকেল তিনটে নাগাদ আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন । তার কিছুক্ষণ পরেই প্রতিবেশী এক মহিলার কাছে খবর পাই আমার স্বামীকে ভোটকেন্দ্রের কাছেই সুব্রত দে ও ফোঁচা দাসরা মিলে মারধর করছে । ওরা ইঁট দিয়ে আমার স্বামীকে থেঁতলে থেঁতলে মারে । খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই ।’
জানা গেছে,প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বামীকে উদ্ধার করে প্রথমে কেতুগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান পূর্নিমা দেবী । সেখান থেকে প্রহৃত প্রৌঢ়কে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় । অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । এই ঘটনায় নিহত প্রৌঢ়ের স্ত্রী কেতুগ্রাম থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ । এদিকে হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যের মৃত্যু হওয়ায় নাবালক সন্তানকে নিয়ে কার্যত পথে বসেছেন নিহতের স্ত্রী ।।