প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ নভেম্বর : সুপারি কিলারদের দিয়ে জ্যাঠতুতো দাদাকে খুন করিয়ে বর্ধমান আদালতে আত্মসমর্পণ করলো খুড়তুতো ভাই । মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে আত্মসমর্পণকারী ওই ব্যক্তির নাম সোমনাথ মণ্ডল ।যিনি পূর্ব বর্ধমানের রায়নার দেরিয়াপুর গ্রামের দেশ বাড়িতে বেড়াতে এসে খুন হওয়া বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলের খুড়তুতো ভাই । পুলিশের দাবি সুপারি কিলারদের দিয়ে সব্যসাচী কে নৃশংসভাবে খুন করানোর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত এই সোমনাথ মণ্ডল ।
রায়না থানার তদন্তকারী অফিসার এদিন সোমানথ মণ্ডলকে ১৪ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান । এদিন সন্ধ্যায় সেই আবেদনের শুনানি হয় ।তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য শুনে সিজেএম আত্মসমর্পণকারী সোমনাথ কে ১০ দিন পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।গত ২২ অক্টোবর রাতে সব্যসাচী মণ্ডল খুন হওয়ার পর তদন্তে নমে পুলিশ ইতিমধ্যেই দুই সুপারি কিলার সহ তিন অভিযুক্ত কে গ্রেপ্তার করেছে ।এবার খুনের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত সোমনাথকে নিজেদের হেপাজতে নিয়ে পুলিশ ঘটনায় জড়িত বাকি অভিযুক্তদের নাগাল পেতে চাইছে।
পুলিশ জানিয়েছে , জ্যেঠতুতো দাদা সব্যসাচী কে খুন করার জন্য সোমনাথ মণ্ডল সুপারি দিয়েছিল জনিসর আলম ওরফে রিকিকে। কলকাতার নারকেলডাঙ্গা থেকে অভিযুক্ত রিকি পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জেরায় সে তদন্তকারী অফিসারদের সেই কথাই জানিয়েছিল । এরপর একে একে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে খুনের ঘটনায় জড়িত মহম্মদ সাদ্দাম ও মহম্মদ জাভেদ আখতার ওরফে জামু । রবিবার রাতে পুলিশ কলকাতার ময়দান থানার বাবুঘাটে অভিযান চালিয়ে জামুকে গ্রেপ্তার করে । সব্যসাচীকে খুনের ঘটনায় জামু সরাসরি যুক্ত ছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে ।
তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের কথায় জানা গিয়েছে ,ঘটনার দিন সোমনাথ ও তাঁর বন্ধু বাইকে করে হাওড়া থেকে সুপারি কিলারদের পথ দেখিয়ে নিয়ে এসে রায়নার দেরিয়াপুরে বাড়ি চিনিয়ে দিয়েছিল ।জামালপুরের কালাড়াঘাটের টোল কাউন্টারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও ঘটনার দিন সোমনাথ ও তাঁর বন্ধুর ঘটনার দিন যাওয়া আসার ছবি ধরা পড়ে ।সেই সিসিটিভি ফুটেজের সূত্রধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ সোমনাথের বাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছে।পুলিশ বাইকটি বাজেয়াপ্ত করার পরেই সোমনাথ চাপে পড়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয় । সূত্রের খবর বেশ কিছুদিন উত্তরবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর এদিন সকালে বর্ধমানে ফিরে এসে সোমনাথ বর্ধমান আদালতে আত্মমর্পণ করেন। সোমনাথের পরিবারের বাকি লোকজন বিদেশে গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশ আশঙ্কা করছে। পুলিশের দাবি, দিল্লিতে এমবিএ পড়া সোমনাথ তাঁর জ্যাঠতুতো দাদা সবসাচী মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। যদিও আদালতে এদিন সোমনাথ বলেন,’ তাঁকে মিথ্যা করে ফাঁসানো হয়েছে ।তিনি দাবি করেছেন ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন । তাই তিনি বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন ।।