এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৫ জুন : দেনার দায়ে হতাশায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক দম্পতি । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে,মৃত দম্পতির নাম জীবানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়(৫৫) ও মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়(৪৯) । শনিবার সকালে একই ঘরের মধ্যে নাইলনের দড়ির ফাঁস দেওয়া দম্পতির ঝুলন্ত দেহটি উদ্ধার করে কাটোয়া থানার পুলিশ । পরে দেহদুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । দুটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জীবানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ছিল কাটোয়া শহরের কাঠগোলাপাড়ায় । বেশ কিছুদিন আগে সেই বাড়ি বিক্রি করে স্ত্রী মিতাদেবী, ছেলে শুভম ও মেয়ে শালিনীকে নিয়ে ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকছিলেন । মিতাদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী । জীবানন্দবাবুর ছেলে একটি বেসরকারি ব্যঙ্কে কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করেন । মেয়ে কাটোয়া কলেজের বিএ প্রথমবর্ষের ছাত্রী । জীবানন্দবাবু পিক আপ ভ্যান ভাড়ায় খাটাতেন ।
মৃত দম্পতির ছেলে শুভম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ গতবছর লকডাউনের সময় থেকেই বাবার ব্যবসায় মন্দা চলছিল । তার ওপর বাজারে বেশকিছু টাকা ঋণও হয়ে গিয়েছিল । এদিকে ব্যাবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুদসহ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না বাবা । তার ফলে বাবা-মা দু’জনেই চরম হতাশায় ভুগছিলেন । আমি আর বোন মিলে বাবা-মাকে অনেক বোঝাতাম । কিন্তু এমন ঘটনা ঘটাবে কল্পনাও করিনি ।’
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে যথারীতি প্রাতরাশ সেরে কাজে চলে যান শুভম । এদিকে শালিনী তখন ঘুমচ্ছিলেন । তিনি প্রায় সাড়ে নটা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠেন । তারপর বাবা-মায়ের শোবার ঘরে যেতেই দু’জনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান । ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল নাইলনের দড়িতে ফাঁস দেওয়া মিতাদেবীর দেহ । কিছুটা পাশেই সিলিং ফ্যান লাগানোর একটি কড়া থেকে একই ধরনের দড়িতে জীবানন্দবাবুর ঝুলন্ত দেহটি দেখতে পাওয়া যায় ।
এদিকে বাবা-মাকে ওই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে ওঠেন শালিনী । তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন । পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহদুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায় ।।