প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ জুলাই : করোনার চতুর্থ ঢেউ এখনও সেভাবে আছড়ে পড়েনি । তবে পূর্ব বর্ধমান জেলায় পার অশনি সংকেত দেখা দিয়ে দিয়েছে।প্রতিদিনই জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।আর এবার করোনা থাবা বসালো খোদ বর্ধমান জেলা আদালতে ।তিন বিচারক আক্রান্ত হয়েছেন।এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বৈঠক করে ওই তিন বিচারকের এজলাসে এখন কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিল জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন।তারা এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছেন ।
জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের জারী করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে,’বর্ধমান আদালতের মাননীয়া সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন), মাননীয় সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন) দ্বিতীয় আদালত,এবং মাননীয়া ষষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট “করোনা” আক্রান্ত হয়েছেন। সেই জন্য আগামী ইংরাজী ০৬.০৭.২০২২ তারিখ হইতে ১৫.০৭.২০২২ তারিখ পর্যন্ত এই তিনটি কক্ষে বর্ধমান বার এ্যাসোশিয়েশনের সদস্যরা কোন কাজ করতে যাবেন না ।’
বর্ধমান বার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা জানিয়েছেন, এই তিনটি কক্ষের বিচারক গণ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।তাই উনারা আদালতে আসছেন ।এই বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা বার এ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন তিনটি কক্ষে না যাওয়ার। পাশাপাশি আদালতের ওই কক্ষগুলি স্যানিটাইজ করার আবেদনও জানানো হয়েছে বার এ্যাসোসিয়েশন থেকে।বৃহস্পতিবার থেকে বার এ্যাসোসিয়েশনের মূল ঘর সহ আদালতের ১৫টি ঘরেই স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু হবে। তবে আদালতের ভিতরের কক্ষগুলি স্যানিটাইজেশনের ব্যাপারে কিছু আইনি প্রক্রিয়া থাকে। তাই আদালতের কাছে তারা ওই কক্ষগুলির পাশাপাশি সমগ্র আদালত চত্ত্বর স্যানিটাইজেশনের আবেদন রেখেছেন। সদনবাবু আরও জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং বিচার ব্যবস্থা একত্রিত ভাবে এখনই যদি কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ভবিষ্যতে আবার করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন ।
তবে শুধু বর্ধমান আদালতই নয়,কালনা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক মহলে ও আদালতেও থাবা বসিয়েছে করোনা। কালনা হাসপাতালের সুপার ডাঃ অরূপ রতন করন এদিন জানিয়েছেন,বুধবার হাসপাতালে ১৩ জনের ’র্যাপিড অ্যান্টিজেন’ টেস্ট করানো হয়।তার মধ্যে ৪ জনের করোনা রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। সুপার এও জানান,তাঁর নিজেরও করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।পাশাপাশি আর যাদের রিপোর্ট পজিটিভ ধরা পড়েছে তাঁদের মধ্যে একজন বিচারকও রয়েছেন।এ ছাড়াও পূর্বস্থলী হাসপাতালে কর্মরত পাঁচ জনেরও করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে বলে ওই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ রায় জানিয়েছেন ।আক্রান্ত সকলকেই হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর গত কয়েকদিন ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলার করোনা আক্রান্ত সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী।নতুনকরে মঙ্গলবার জেলায় করোনা ৩৭ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে।তার মধ্যে শুধুমাত্র বর্ধমান পৌর এলাকাতে করোনা আক্রান্ত ১৫ জন।কয়েকদিন আগে একজন করোনা আক্রান্তের মৃত্যুও হয়েছে । করোনার এই সংক্রমণ বৃদ্ধিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরওদুশ্চিন্তা বেড়েছে। মাস্ক পরা ও দূরত্ব বিধি মানার বিষয়টি পুনরায় বাধ্যতা মূলক করা না হলে সংক্রমণ বৃদ্ধি রোখা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।।