এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১২ নভেম্বর : বাংলাদেশের ইসলামি জামাত ইসলামির হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার নতুন কৌশল হল…’হিন্দু কমিটি’ গঠন । প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করার পর ওই জঙ্গি সংগঠনটি বাংলাদেশে পুরোদমে সেই ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে । আর তাদের এই ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ ন্যাশানাল পার্টির (বিএনপি) সমর্থক বলে পরিচিত গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের পুরোদমে সহযোগিতাও পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ । এবারে খুলনাতে ‘হিন্দু কমিটি’ গঠন করেছে জামায়াতে ইসলামী ।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। রবিবার (১০ নভেম্বর) উপজেলার যোবায়েদ আলী মিলনায়তনে হিন্দু সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় তিনি এই কমিটি ঘোষণা করেন। এই কমিটিতে বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে সভাপতি, অধ্যক্ষ বাবু দেব প্রসাদকে সাধারণ সম্পাদক ও বাবু গৌতম মণ্ডলকে কোষাধ্যক্ষ করে ১১ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। কমিটিতে সহ-সভাপতি বাবু প্রশান্ত মণ্ডল, ডাঃ হরিদাস মণ্ডল ও কানাই লাল কর্মকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধদেব মণ্ডল এবং অমূল্য কুমার সরকার, পুলকেশ মণ্ডল, বিপ্লব সরকার, প্রদীপ কুমার সরকারকে সদস্য ঘোষণা করেন।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। নতুন কমিটির সকলেই গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের অনুগামী বলে খবর ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে চাই। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের কর্তাব্যক্তিগণ, দলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দেশে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে আইনের শাসন, সকল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসররা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এই বিজয়কে দুষ্কৃতকারীরা যেন নস্যাৎ করতে না পারে এজন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সোচ্চার থাকতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ছাত্র জনতাসহ সকল নিহতদের রক্তের বিনিময়ে ঐতিহাসিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণ-বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে অর্জিত আজকের এই নতুন বাংলাদেশ। বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তরুণদের স্বপ্ন, ন্যায়, সাম্য ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে এবং চলমান পরিস্থিতিতে শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করাই জামায়াতে ইসলামীর প্রথম কাজ। ডুমুরিয়ার শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য জামায়াত নেতা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলে ঘোষণা করেন ।
তবে ওই কট্টরপন্থী ইসলামি নেতা মুখে যতই ‘অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া’ এবং ‘সম্প্রীতির’ কথা বলুক না কেন বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দুরা যত সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার হচ্ছে তার সিংহভাগই জামাত ইসলামির দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ । বাংলাদেশের “লাভ জিহাদ” পরিচালনার মূল হোতা মনে করা হয় এই জামাত ইসলামিকে । এখন তারা দেশ থেকে হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন করতে ‘হিন্দু কমিটি’ গড়ার নামে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ‘হিন্দু কমিটি’ গঠনের সভায় আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমান ও উত্তরের সেক্রেটারি বি এম আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আইনজীবী আবু ইউসুফ মোল্লা, ও জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি বেলাল হোসাইন রিয়াদরা উপস্থিত ছিল । অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য উত্তর থানা আমীর গাজী সাইফুল্লাহ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন, কৃষ্ণ নন্দী, অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ, কানাই লাল কর্মকার, ডা. হরিদাস মণ্ডল, সদেশ হালদার, সনজিৎ রায়, প্রভাস সরকার, প্রশান্ত মণ্ডল, বুদ্ধদেব মণ্ডল, গৌতম মণ্ডল প্রমুখ।।