২৬/১১ মুম্বাই হামলায় সবকিছুই সন্দেহজনক এবং রহস্যে ভরা ! সেই সময় কেন্দ্রে ও মহারাষ্ট্র রাজ্যে উভয় জায়গাতেই কংগ্রেস সরকার । একটা পরিবার কেন্দ্রিক ওই দলটির পরিকল্পনা অন্য কিছু ছিল । পাকিস্তানের পরিকল্পিত ২৬/১১ মুম্বাই হামলাকে ‘হিন্দু আতঙ্কবাদ’ তত্ত্ব খাড়া করে মোড় অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল । যদি পাকিস্তানি সন্ত্রাসী কাসাবকে জীবিত ধরা না পড়ত তাহলে “সমীর চৌধুরী, অরুণোদয় কলেজ, হায়দ্রাবাদ” নামে একটি ছেলেকেও হায়দ্রাবাদ থেকে অপহরণ করে হত্যা করে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা হত। অজান্তেই একটি সদাচারী পরিবারকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হত । আর এই আশঙ্কা নিছক অমূলক নয় ।
কল্পনা করুন, প্রতিটি পাকিস্তানি সন্ত্রাসীকে একটি হিন্দু পরিচয়পত্র দিয়ে পাঠানো হয়েছিল এবং সেই ব্যক্তিরা বিদ্যমানও ছিল, অর্থাৎ পরিচয়পত্রগুলি জাল নামে তৈরি করা হয়নি ।পাকিস্তানি সন্ত্রাসী কাসাবের ডান হাতে লাল তাগা প্রমাণ করে যে পাকিস্তান আর ভারতের একটা চক্র হিন্দু সম্প্রদায়কে কালিমালিপ্ত করতে কতবড় ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিল ।
এইভাবে, অমর শহীদ তুকারাম ওম্বলের জন্য কংগ্রেসের এই কুটিল চক্রান্তের শিকার হওয়া থেকে ১০টি নিরীহ হিন্দু পরিবার রক্ষা পেয়েছিল। কংগ্রেসের আর এক কুখ্যাত নেতা মধ্যপ্রদেশের দিগ্বিজয় সিং এমনকি “মুম্বাই আক্রমণ আরএসএসের ষড়যন্ত্র” নামে একটি পূর্ব-লিখিত বই প্রকাশ করেছিল । কথিত আছে যে, তৎকালীন মুম্বাই পুলিশ কমিশনার হাসান গফুর, যিনি একজন মুসলিম ছিলেন, ঘটনার ১০ দিন আগেই প্রকাশককে এই বইটি ফেরত দিয়েছিলেন। সবকিছুই সন্দেহের আওতায়।
রাহুল গান্ধী বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের সময় “হিন্দু সন্ত্রাসবাদ” শব্দটি উল্লেখ করতেন। তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক সাংবাদিক সম্মেলনে খোলাখুলি বলেছিলেন যে ভারতে কেবল মুসলমানরাই সন্ত্রাসী নয়, “হিন্দু” সন্ত্রাসীও রয়েছে। সমগ্র কংগ্রেস দল, সমগ্র কংগ্রেস ইকো-সিস্টেম, ‘ডিপ স্টেটে’র সদস্যরা এটি প্রমাণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছিল এবং আজও গোপনে করে । বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে অহিংস এবং শান্তিপ্রিয় সম্প্রদায় হিন্দুদের উপর এই তত্ত্ব চাপিয়ে দেওয়ার একটা বিশাল পরিকল্পনা ছিল কংগ্রেসের ।
২৬/১১ মুম্বাই হামলার সাথে সম্পর্কিত, দেশের গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভের মধ্যে তিনটি এই গুরুতর প্রশ্নগুলিতে ঘেরা ছিল। এখন কেবল তেহভুর রানাই এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে । আশা করা হচ্ছে যে তেহভুর রানাও সাড়া দেবে । আর এই স্তম্ভগুলির মধ্যে একটি ছিল মুম্বাই পুলিশ। ২৬/১১ মুম্বাই হামলায়, সন্ত্রাসীরা স্বপ্নের শহরের তাজ হোটেল, নরিমান হাউস, মেট্রো সিনেমা এবং ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস সহ অনেক জায়গায় আক্রমণ করেছিল। এই হামলায় ১৫টি দেশের ১৬৬ জন নিহত এবং ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুম্বাই পুলিশ, হোমগার্ড, এটিএস, এনএসজি কমান্ডো সহ মোট ২২ জন নিরাপত্তা কর্মী শহীদ হন।
এটা উল্লেখযোগ্য যে,যখন মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল, তখন মুম্বাই পুলিশ কমিশনার ছিলেন হাসান গফুর। গফুর তৎকালীন নতুন এটিএস প্রধান পরম বীর সিং এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন। এই সেই পরমবীর সিং যিনি পরবর্তীতে পালঘর সাধু হত্যা মামলা, সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যময় মৃত্যু, অর্ণব গোস্বামীর উপর পৈশাচিক অত্যাচার এবং মুকেশ আম্বানির কাছ থেকে চাঁদাবাজির জন্য বোমা বিস্ফোরণ মামলার সময় মুম্বাই পুলিশ কমিশনার হিসেবে অত্যন্ত কুখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন।
এটিএস প্রধান হিসেবে, সাধ্বী প্রজ্ঞাও তাদের অপকর্ম সম্পর্কে খুব খোলামেলাভাবে কথা বলছেন। পরে মুম্বাই পুলিশের প্রাক্তন এসিপি শমসের খান পাঠানও কাসাবের ফোন চুরির জন্য পরমবীর সিংকে অভিযুক্ত করেন। এটি ছিল অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ, যার তদন্ত কখনও হয়নি। কিন্তু পরমবীর সিং ছাড়াও, হাসান গফুর অন্যান্য লোকদের সম্পর্কেও গুরুতর কথা বলেছিলেন । তিনি বলেছিন যে-মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার সময় অপরাধ শাখার অতিরিক্ত কমিশনার দেবেন ভারতী, দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত কমিশনার কে. ভেঙ্কটেশম, আইন ও শৃঙ্খলা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার কেএল প্রসাদ এবং এটিএস প্রধান পরমবীর সিং তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
২৬/১১ রাতে মুম্বাই হামলার সময়, কোনও রাজনীতিবিদ বা সাংবাদিক নয়, বরং মুম্বাই পুলিশ কমিশনার নিজেই অনেক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। তাহলে এটা কি নিছক কাকতালীয় ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত…?
কেন এর কোনওটিরই তদন্ত করা হয়নি? কেন কেন্দ্র এবং মহারাষ্ট্র উভয় ক্ষেত্রেই তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এই বিষয়ে ধূর্তভাবে নীরব ছিল? এই ধরণের অনেক প্রশ্ন গত ১৭ বছর ধরে দেশ এবং মুম্বাইয়ের মানুষের মনে চাপা পড়ে আছে। এই প্রশ্নের উত্তরের সাথে কি পাকিস্তানের কোন সম্পর্ক আছে? আর যদি থাকে, তাহলে তেহভুর রানার কাছে অবশ্যই এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর থাকতে হবে। দেখা যাক ভবিষ্যতের গর্ভে লুকিয়ে থাকা এর ফলাফল কী হয় । এতগুলো নিরীহ প্রাণ নিয়ে কংগ্রেস যে কত বড় জঘন্য পাপ করেছে এটা ভাবতেই শিহরণ জাগে ।।