২০ হাজার হিন্দুর হত্যাকারী ৩৮৭ জন মোপলা জিহাদির নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রেখেছিল ভারতের অন্যতম তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল কংগ্রেস । জিহাদিদের স্বাধীনতা সংগ্রামীতে পরিণত করার কংগ্রেসের এই ষড়যন্ত্রের উন্মোচন হয়েছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির সরকার আসার পর । এখন মোদী সরকার এবং আইসিএইচআর ওই জিহাদিদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তালিকা থেকে তাদের নাম মুছেও ফেলা হয়েছে ।
এতদিন পর্যন্ত দেশের কোনও নাগরিক জানতেন না যে চাক্কিপারম্বান ভারিয়াম কুন্নাথু কুঞ্জাহম্মদ হাজি (Variyam Kunnathu Kunjahammed Haji), যিনি মোপলাহ গণহত্যা চালিয়েছিলেন এবং “মালায়ালি রাজ্যম” নামে একটি “ইসলামিক রাষ্ট্র” প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং নিজেকে “আরন্দের সুলতান” ঘোষণা করেছিল । তারপরেও হাজি এবং তার ৩৮৭ জন হিন্দু খুনি জিহাদি কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গিয়েছিল? তাদের পরিচালিত হিন্দু গণহত্যায় ৬ মাস ধরে একটানা হিন্দুদের নরসংহার করা হয়েছিল, অসংখ্য ধর্ষণ করা হয়েছিল, গর্ভবতী মহিলাদের পেট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, শিশুদের বর্শার ডগায় গেঁথে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই সাম্প্রদায়িক হিংসা এতটাই নৃশংস ছিল যে, তা সারা বিশ্বের মানুষকে হতবাক করে দিয়েছিল।
কিন্তু কংগ্রেসের বদান্যতায় কুনজাহম্মদ হাজী এবং তার সহযোগী আলী মুসলিয়ারসহ তাদের ৩৮৭ জন সঙ্গী, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক হিসেবে অভিহিত হয়ে আসছিল, কিন্তু এই গণহত্যার তারা ভারতের স্বাধীনতার জন্য একটিও স্লোগান তোলেনি, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একটিও স্লোগান ওঠেনি, কংগ্রেস এবং গান্ধী-নেহরুর বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলা হয়নি। তাদের সব স্লোগান ছিল জিহাদের । কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের স্লোগান দিয়ে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর এই ধরণের ভয়ঙ্কর অপরাধীদের মুক্তিযোদ্ধা বানানো এবং পেনশন দেওয়ার ষড়যন্ত্র কে করেছিল ? আত্মবিস্মৃত হিন্দু এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কোনো দিন খোঁজার চেষ্টা করেনি । পরিবর্তে তারা গান্ধী-নেহেরু পরিবারের তাঁবেদারি করে গেছে ও এখনো যাচ্ছে ।
১৯২১ সালের খিলাফত আন্দোলনের আড়ালে যখন এই ঘটনাটি খেলাফতের পক্ষে সংঘটিত হয়েছিল, তখন কারা এটিকে স্বাধীনতার লড়াই বলে অভিহিত করেছিল? দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী ব্যক্তিদের তালিকার পঞ্চম অংশে স্থান করে কেন তাদেরকে দেশপ্রেমের পদক দিয়ে প্রকাশিত, সম্মানিত এবং ভূষিত করা হয়েছিল? সর্বোপরি, ইসলামিক স্টেটকে সমর্থনকারী এই জিহাদিদের স্বাধীনতাপ্রেমীদের তালিকায় কে যুক্ত করেছে ? কে এই ষড়যন্ত্র করেছিল? এই ষড়যন্ত্র কে সফল করল? এমন একটি ষড়যন্ত্র যার উপর ১৯২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বীর বিনায়ক দামোদর সাভারকর ছাড়া আর কেউ আঙুল তোলেনি। উত্থাপিত যেকোনো আওয়াজ দমন করা হয়েছিল, অথবা, জনসাধারণকে সেই আওয়াজ শুনতে দেওয়া হয়নি। দেশের জনগণকে এই ধরনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের দেশবিরোধী হিসেবে মেনে নিতে হবে।
কেরালার “মালাবার বিদ্রোহ” বা মোপলা বিদ্রোহ নামে প্রচারিত এই গণহত্যা মূলত কোনও বিদ্রোহ ছিল না; এটি ছিল একটি ভয়াবহ, হৃদয়বিদারক হিন্দু নরসংহার। কেরালার মালাবার উপকূলে, মোপলা বা মুপ্পাল্লা নামে মুসলমানরা একটি সংগঠিত জনতা জড়ো করেছিল এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য পরিচালিত গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের আড়ালে এই ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল। এটি কোনও দাঙ্গাও ছিল না কারণ হিন্দুরা প্রতিশোধ নিয়েছিল এমন কোনও প্রমাণ ইতিহাসে নেই । সেই ঘটনার ইতিহাসে হিন্দুদের দ্বারা মুসলমানদের হত্যার কোন সঠিক তথ্য নেই। ব্রিটিশরা অবশ্যই পরে এই গণহত্যা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল, যেখানে কিছু মোপলা নিহত হতে পারে,কিন্তু যারা তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ইসলামি জিহাদ করেছিল তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামী বলা হত কিভাবে ?
এটি মূলত খিলাফত আন্দোলন যা ব্রিটিশদের দ্বারা তুর্কি খলিফাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ভারতে শুরু হয়েছিল এবং এটি তুর্কি খলিফার পক্ষে পরিচালিত হচ্ছিল। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী যাকে সমর্থন করেছিলেন । ভারতের স্বাধীনতার সাথে এর কোনও সম্পর্ক ছিল না। এই খিলাফত ইসলামী রাষ্ট্রের ধারণার প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্ব করে, যা বিশ্বের মুসলমানরা আজও প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আজ তুরস্ক এবং পাকিস্তান এই লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে। তালিবানও একই চেষ্টা করছে। এটি ছিল মূলত সন্ত্রাসী তালিবান মানসিকতার প্রথম আন্দোলন।
বিস্তারিত গবেষণার পর, ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ (ICHR) এর তিন সদস্যের তদন্ত দল এই ৩৮৭ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যোগ্য বলে মনে করেনি এবং তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকার পঞ্চম খণ্ড থেকে এটি বাদ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল। যার ভিত্তিতে সরকার তাদের নাম সেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা থেকে তাদের সকলের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। প্রকৃত দেশ প্রেমিকদের সম্মান জানানোর তাদের নামের পাশ থেকে এই জিহাদিদের নাম মুছে ফেলার এই মহৎ কাজের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য ।।