এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু-কাশ্মীর,১৪ ফেব্রুয়ারী : জম্মু-কাশ্মীরে বিপুল পরিমান রাষ্ট্রীয় জমি এতদিন জবরদখল করে রেখেছিল এক শ্রেণীর মানুষ । জবরদখল করা জমিতে ঘরবাড়ি, মার্কেট,পার্টি অফিস গড়ে তোলা হয়েছিল । এমনকি নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে বিক্রি পর্যন্ত করে দিয়েছিল এক শ্রেণীর অসাধু চক্র । জবরদলকারীদের তালিকায় রয়েছে রাজনৈতিক নেতারাও । ওই সমস্ত জমি পুনরুদ্ধারের কোনো আগ্রহই দেখায়নি প্রায় ছয় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকার । এই প্রথম রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগী হল নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার । রাষ্ট্রীয় জমির উপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা নির্মানগুলি বেশ কিছুদিন ধরেই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে । জম্মু-কাশ্মীরের রাজস্ব বিভাগের কমিশনারের সেক্রেটারি বিজয় কুমার বিধুরি সমস্ত জেলা প্রশাসককে ১০০ শতাংশ দখল অপসারণ নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়ার পরে কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর জুড়ে ১০ লক্ষ কানাল (এক কানাল = ৬০৫ বর্গ গজ) জমি পুনরুদ্ধার করেছে বলে খবর ।
এদিকে এই জবরদখল উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে লেলিয়ে দিতে পুরদমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেসসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি । কোথাও বুলডোজারকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, কোথায় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কর্মীরা । কংগ্রেস,ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপির মতো রাজনৈতিক দলগুলি এই অভিযানের বিরুদ্ধে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে এটি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে ।সোমবার কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রা জম্মু ও কাশ্মীরে চলমান দখলবিরোধী অভিযান নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে বলেছেন যে শান্তি ও আস্থার জন্য সাধারণ মানুষের কথা শোনা প্রয়োজন এবং “বুলডোজারের নীচে তাদের অধিকারকে পিষে ফেলা উচিত নয়” ।
হিন্দিতে একটি টুইটে প্রিয়াঙ্কা অভিযোগ করেছেন যে লাদাখে তাদের সাংবিধানিক অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে জনগণের উপর নৃশংসতা চালানো হচ্ছে।
কাশ্মীরে সাধারণ মানুষ যা বলছে তাতে কর্ণপাত না করে, তাদের বাড়িগুলিকে বুলডোজ করা হচ্ছে” বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক । তিনি বলেছেন,’একটি দেশ মানুষ দিয়ে তৈরি।। শান্তি এবং আস্থার জন্য, সাধারণ মানুষের কথা শুনতে হবে এবং তাদের অধিকারকে বুলডোজারের নীচে পিষে ফেলতে দেওয়া হবে না ।’
এদিকে মধ্য কাশ্মীরের গন্ডারবাল জেলার সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ বাসিন্দাদের ৭ দিনের মধ্যে নদীর তীর এবং অন্যান্য জলাশয় বরাবর অবৈধ দখল অপসারণ করতে বলেছে । নির্দেশ না মানলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে । জেলার সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ (আইএন্ডএফসি) জমিতে যারা দখল করেছে তাদের সাত দিনের মধ্যে দখল অপসারণ করতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,’যদি কোনো ব্যক্তি দখল অপসারণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিভাগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে এবং জনগণকে এজন্য আর্থিকভাবে জরিমানা ও আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।।