এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাজস্থান,১৭ আগস্ট : রাজস্থানের উদয়পুরে একটি সরকারি স্কুলের দশম শ্রেণীর হিন্দু পড়ুয়ার উপর সহপাঠী মুসলিম পড়ুয়ার ছুরি হামলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়েছে । আক্রান্ত পড়ুয়া গুরুতর আহত হয় । তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে স্কুল কর্তৃপক্ষ । এদিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে শপিংমল ভাঙচুর করে। গ্যারেজে পার্ক করা গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। কালেক্টর অরবিন্দ পোসওয়াল বলেছেন, হামলার পর পালিয়ে যাওয়া নাবালক ছাত্র এবং তার বাবাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে,শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে উদয়পুর শহরের ভাটিয়ানি চৌহাট্টায় একটি সরকারি স্কুলের বাইরে দেবরাজ নামে এক দলিত হিন্দু ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে আহত করা হয়। হামলাকারী ছাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের বলে জানা গেছে। এই খবর পাওয়া মাত্রই স্কুলের শিক্ষকরা আহত ছাত্রকে মহারানা ভূপাল সিং হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই ছাত্র সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে হিন্দু ছাত্রকে ছুরিকাঘাতের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয় হিন্দু সংগঠনগুলোর মধ্যে। অনেক হিন্দু সংগঠনের কর্মীরা এবং বিজেপির কর্মকর্তারা হাসপাতালের কাছে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শীঘ্রই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে যায় এবং ক্ষিপ্ত জনতা শ্রমিকরা বাজারে পৌঁছে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে তারা বাজার বন্ধ করে দেয় । এসময় কয়েকজন গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । বন্ধ করে দেওয়া হয় চেতক সার্কেল, হাতিপোল, অশ্বিনী বাজার, বাপু বাজার, দিল্লি গেট এবং ঘন্টাঘর এলাকার সমস্ত দোকানপাট । পরে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় ।
জেলা শিক্ষা আধিকারিক লোকেশ ভারতী জানিয়েছেন, দুই ছাত্রের বয়সই প্রায় ১৫ বছর। দুজনেই ভাটিয়ানী চৌহাট্টা সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই শ্রেণীতে পড়ে। কি কারণে দুজনের মধ্যে মারামারি হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। দুপুরের খাবারের সময় দুজনেই স্কুল থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় মুসলিম ছাত্র দেবরাজের উরুতে দুই-তিনবার ছুরিকাঘাত করে। স্কুলের অধ্যক্ষ ইশা ধর্মাবত জানান, মধ্যাহ্নভোজের প্রায় ৫-৭ মিনিট পরে কিছু ছাত্র স্কুলের বাইরে থেকে চিৎকার করতে করতে ভিতরে আসে। আমি সঙ্গে সঙ্গে বাইরে গিয়ে দেখি এক ছাত্র আহত অবস্থায় পড়ে আছে। কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে আমার স্কুটারে বসিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অধ্যক্ষ বলেন, উভয় ছাত্রই পড়ালেখায় ভালো ছিল এবং কখনো মারামারি করতে দেখা যায়নি। আহত ছাত্রের অবস্থা স্থিতিশীল। শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বলে তিনি জানান । জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ পোসওয়াল জনগণকে কোনো গুজবে কান না দেওয়ার এবং শহরে শান্তি ও শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করার জন্য আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত,এটি সেই উদয়পুর, যেখানে কানহাইয়ালাল দর্জিকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল । কানহাইয়ালালের অপরাধ ছিল যে তিনি ইসলামের নবি সম্পর্কে মন্তব্য করা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে সমর্থন করেছিলেন ।।