এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৭ নভেম্বর : মৌলবাদী মানসিকতার চরম সীমায় পৌঁছে গেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ । মন্দিরে হামলা,মূর্তি ভাঙচুর, হিন্দুদের উপর আক্রমণ,লাভ জিহাদের ঘটনা তো লেগেই আছে । এবারে বাংলাদেশের শিক্ষকদের সাম্প্রদায়িক রূপ দেখলো গোটা বিশ্ব । বাংলাদেশের এইচএসসির বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানির ঘটনা ঘটেছে । ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ।
আসলে রবিবার থেকে বাংলাদেশে এইচএসসির পরীক্ষা শুরু হয়েছে । ওই দিন ছিল বাংলার প্রথম পত্রের পরীক্ষা । আর ওই প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নে বলা হয়েছে : “নেপাল ও গোপাল দুই ভাই । জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘ দিনের । অনেক সালিশি বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি । কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ । এখন জমির ভাগবন্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে । আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে । কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয় । এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায় । কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে ।” এর ভিত্তিতে ৪ টি প্রশ্ন করা হয় । তার মধ্যে একটিতে নেপাল চরিত্রের সঙ্গে মিরজাফরের চরিত্রের তুলনা করতে বলা হয়েছে ।
এদিকে এই প্রশ্নপত্রে এই প্রকার সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্নকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মুসলিম কট্টপন্থার অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে । বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হতেই সোমবার দুপুরে ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিক সম্মেলন করে এনিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি । তিনি বলেছেন, বিষয়টা দুঃখজনক । কেউ প্রশ্ন তৈরি করলে সেটা অন্য কারো দেখার সুযোগ থাকে না।প্রশ্নে যাতে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি না থাকে সেই নির্দেশ দেওয়া আছে ।’ পাশাপাশি মন্ত্রীর সাফাই, ‘যিনি প্রশ্নটি করেছেন তার দৃষ্টিতে বিষয়টি হয়তো এড়িয়ে গেছে বা বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করেছেন । এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’
তবে মন্ত্রী যতই প্রশ্নপত্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকের ভূমিকাকে লঘু করার চেষ্টা করুন না কেন বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে মুসলিম কট্টরপন্থী মানসিকতা ঢুকে পড়েছে তা এই প্রশ্নপত্র হল সাম্প্রতিক প্রমান । কয়েক মাস আগে কপালে সিঁদুরের টিপ পড়ায় অপরাধে এক হিন্দু কলেজ শিক্ষিকাকে বাংলাদেশের পুলিশের এক কনস্টেবল তার বাইকের চাকা দিয়ে পিষে মারার চেষ্টা করেছিল । আর ঘটনাটি ঘটেছিল রাজধানী ঢাকাতে । প্রতিনিয়ত এই রকম ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের । ফলে মৌলবাদীদের দাপটে সর্বদা আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের ।।