এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভোপাল,২০ মার্চ : মধ্যপ্রদেশের রাইসেন (Raisen)জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে একজন আদিবাসী যুবকের । আহত অর্ধ শতাধিক । আহতদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর । আহতদের হামিদিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে । খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছোটেন আইজি দীপিকা সুরি, কালেক্টর অরবিন্দ দুবে এবং এসপি বিকাশ শাহওয়াল । এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুটি রাইফেলও উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা । আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পার্শ্ববর্তী চার জেলার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।
শুক্রবার হোলির দিন ঘটনাটি ঘটেছে রাইসেন জেলার সিলওয়ানি থানার অন্তর্গত খামারিয়া খুর্দ (Khamaria Khurd) গ্রামে । জানা গেছে, ওই দিন সন্ধ্যায় মুসলিম সম্প্রদায়ের এই ব্যক্তি তাঁর বোনকে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন । জোরে বাইক চালানোর জন্য কয়েকজন আদিবাসী যুবক ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কিছু একটা মন্তব্য করেন । আর তার জেরে বাইক আরোহী ওই ব্যক্তি কিছুক্ষণ পর বেশ কয়েকজনকে সঙ্গে করে সেখানে আসে । তারপর দু’পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে হিংসাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায় । যদিও গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে ।
জানা গেছে,ওই দিন রাতের দিকে দু’পক্ষের শতাধিক লোকজন মুখোমুখি হয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় । উন্মত্ত লোকজন আশেপাশের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়,জ্বালিয়ে দেয় ৫ টি মোটরবাইক । চলে এলোপাথাড়ি গোলাগুলি । গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজু নামে এক আদিবাসী যুবকের । অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হয় । খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । আহতদের উদ্ধার করে ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ ।
পরে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাইসেন জেলায় সংঘর্ষে রাজু নামে এক আদিবাসী যুবকের দুঃখজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে । হরি সিং আর রাজজী ভাই নামে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ।নরেন্দ্র নামে একজনের চোখে গুলি লেগেছে । নিহত রাজু আদিবাসীর পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে । হরি সিং,রাজজী ভাই ও নরেন্দ্রকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে । অন্যান্য আহতদেরও ৫০-৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে । সেই সঙ্গে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যাবস্থাও করা হবে ।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গুলি চালানো কোনও সাধারণ অপরাধ নয় । অপরাধীদের কোনও অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না ।’
বিভাগীয় কমিশনার গুলশান বামরা(Gulshan Bamra) জানিয়েছেন,এই ঘটনায় সিলওয়ানি থানায় (Silwani police station) ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে । শনিবার বিকেল পর্যন্ত ১৩ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে । পাশাপাশি ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি অস্ত্র, ১২ এমএম রাইফেল, ২টি ট্রাক্টর, একটি পিকআপ ভ্যানও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ।।