এইদিন ওয়েবডেস্ক,আলিপুরদুয়ার,৩০ এপ্রিল : কলেজ পড়ুয়া মেয়ে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন । মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে কর্মরত বাবা । একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে অবশেষে তিনি একটা পেমেন্ট অ্যাপের (https://www.impactguru.com/fundraiser/help-anwesa-barman) মাধ্যমে সাহায্যের কাতর আবেদন জানিয়েছেন । তার সেই মর্মস্পর্শী পোস্ট পড়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ছে অনেক মানুষের চোখ । কেউ কেউ সামর্থ্য অনুযায়ী বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যে হাত ।
ধ্রুব বর্মণ নামে ওই পুলিশকর্মী লিখেছেন,আমার নাম ধ্রুব বর্মণ , এবং আমার প্রিয় মেয়ে, অন্বেষাকে বাঁচানোর জন্য আপনার সাহায্যের জন্য আন্তরিক আবেদন জানাচ্ছি। তার মাল্টি-অর্গান ডিসফাংশন সিনড্রোম এবং গুরুতর এআরডিএস ধরা পড়েছে এবং বর্তমানে সে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের আইসিইউতে তার জীবনের জন্য লড়াই করছে ।’ তিনি লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে, আমি সবসময় অন্যদের সেবায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আজ, একজন বাবা হিসেবে আমি নিজেকে অসহায় মনে করি, তার সন্তানের কষ্ট দেখছি, তার যন্ত্রণা লাঘব করতে পারছি না। তাকে অচেতন, যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত এবং আগের মতো হাসতে, হাসতে আমাকে “বাবা” বলে ডাকতে পারছে না দেখে আমার হৃদয় ভেঙে যায়।’
ধ্রুব বর্মণ বলেছেন,আমরা ইতিমধ্যেই তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৩০ টাকা লক্ষ খরচ করেছি , আমাদের সকল সম্পদ শেষ করে দিয়েছি। কিন্তু অন্বেসার লড়াই এখনও শেষ হয়নি, তার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এখনও ৩৪,৮৯,৬৭১ টাকা প্রয়োজন । হাসপাতালে প্রতিটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা ব্যয় এখন আমাদের নাগালের বাইরে।’
তিনি সকল মানুষের উদ্দেশ্যে আবেদন জানিয়েছেন, আমাদের জীবনের এই অন্ধকারতম সময়ে আমি বিনীতভাবে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। আপনাদের অবদান, যতই ছোট হোক না কেন, আমার মেয়েকে বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। যদি আপনারা দান করতে অক্ষম হন, তাহলে অনুগ্রহ করে এই আবেদনটি অন্যদের সাথে শেয়ার করে আমাদের সাহায্য করুন যারা হয়তো সক্ষম।অন্বেষা কেবলই একজন তরুনী যার স্বপ্ন আছে, বেঁচে থাকার জন্য এখনও অনেক বাকি আছে। আপনার সাহায্য তাকে সেই সুযোগ করে দিতে পারে। দয়া করে আমাদের পাশে দাঁড়ান এবং তার বেঁচে থাকার কারণ হোন। একজন হতাশ বাবার পক্ষ থেকে, আপনার ভালোবাসা, প্রার্থনা এবং সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’
জানা গেছে,উত্তর দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে বাড়ি ধ্রুব বর্মনের ৷ তিনি রাজ্য পুলিশের একজন এসআই । বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলায় কর্মরত। এর আগে ভাতার থানায় এবং মঙ্গলকোট থানাতেও কর্মরত ছিলেন ধ্রুব বর্মন। পরে বদলি হয়ে যান । তাঁর মেয়ে অন্বেষা বর্মন ফিসারি নিয়ে পড়াশোনার জন্য তামিলনাড়ুতে গিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চের ৬ তারিখ অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে মেয়েটি । গত ৮ মার্চ কোটারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে । কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে এখন অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে বিপুল খরচ হয়ে গিয়েছে ধ্রুববাবুর । এখনও হাসপাতালে মোটা অঙ্কের টাকা বকেয়া আছে । যেটুকু গচ্ছিত টাকা বা স্থাবর সম্পত্তি ছিল সব মেয়ের চিকিৎসায় লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি ।
ধ্রুববাবু জানান,প্রথম দিকে কিডনি ফেল করেছিল। তারপর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই মুহূর্তে মেয়েকে বাঁচাতে গেলে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনও হতে পারে। প্রচুর টাকা দরকার । কিন্তু তিনি এখন কপর্দক শূন্য । ধ্রুব বর্মন ইতিমধ্যে সহকর্মীদের কাছে এবং পুলিশকর্মী সংগঠনের কাছেও সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে ।।