এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২০ জুলাই : বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মৌলবাদীদের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছে না অবলা পশুরাও । গত বছর বাংলাদেশ থেকে খবর আসে যে নামাজের সময় কয়েকটি পথকুকুর শাবক ক্ষুধার জ্বালায় চিৎকার করার অপরাধে একজন ব্যক্তি শাবকগুলিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল । ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি বাড়ির জসিম উদ্দিন নামে এক নরপশু বিনা কারণে দুটি মা কুকুর ও নয়টি শাবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে । এবারে অনাবাদী জমিতে ঘাস খাওয়ার অপরাধে একটি গাভি গরুর লেজ কেটে নিলো মহম্মদ আজাহারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি । বাংলাদেশের দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ঘটনা । ওই নরপশু আবার বুলিয়াবাজার কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক । একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তির কাছ থেকে এই প্রকার নৃশংসতায় তার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
জানা গেছে,গাভিটির মালিক হতদরিদ্র পশুপালক অমিত্ত রায় । দুপুরে নিজের গরুকে একটু ঘাস খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন পাশের এক অনাবাদী জমিতে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—গরুটিকে একটু খেতে দেওয়া, যাতে প্রাণীটি ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট না পায় । কিন্তু সেই জমির মালিক বুলিয়াবাজার কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মহম্মদ আজাহারুল ইসলাম এই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেনি । ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজাহারুল প্রথমে গরুটিকে লাঠি দিয়ে পেটায় । এরপর গরুটির লেজ ধরে টেনে কেটে দেয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে। ব্যথায় ছটফট করতে থাকে অবলা গাভীটি ৷
ঘটনার পর কাঁদতে কাঁদতে কৃষক ও পশুপালক অমিত্ত রায় বলেন,”জমিটা ওনার ঠিকই, কিন্তু সেটা তো পতিত। আমি যদি ভুল করে থাকি, আমাকে শাস্তি দিতেন। কিন্তু অবলা প্রাণীর লেজ কেটে দেওয়া কি কোনো মানুষের কাজ?” এদিকে এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয় । সাধারণ মানুষ স্তব্ধ, হতবাক হয়ে যান । একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি কীভাবে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা ।
স্থানীয়রা বলছেন,”এটা শুধু গরুর লেজ কাটার ঘটনা নয়, এটা মনুষ্যত্ব কেটে নেওয়ার বেদনাদায়ক প্রতিচ্ছবি।” তারা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিয়েছেন, এই ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।

