প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ মার্চ : ঠাকুর পুজোর জন্য বাগানে ফুল তুলতে যাওয়া মেয়ের পায়ে ছোবল বসিয়ে ছিল বিষধর সাপ।সেই সাপটিকে বালতিতে ভরে ফেলেই মেয়েকে কোলে তুলেনিয়ে পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। মেয়েটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য তাঁরা চিকিৎসকের কাছে কাতর আবেধন জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি।হাসপাতালের চিকিৎসকরা কিশোরী মেয়ে রিঙ্কু ক্ষেত্রপাল কে মৃত বলে ঘোষণা করেন।স্কুল পড়ুয়া মেয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছে বাবা-মা সহ পরিজনরা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে,বিষধর সাপের ছোবলে প্রাণ হারানো কিশোরী রিঙ্কু ক্ষেত্রপালের বাড়ি কালনা ২ ব্লক সংলগ্ন মেমারির পলতা গ্রামে ।কালনার বিরুহা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল এই কিশোরী। রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ বাড়ির বাগানে ফুল তুলতে গিয়ে ছাত্রীটি সর্প দংশনের শিকার হয় ।
পরিবার সদস্যদের কথায় জানা গিয়েছে,অনান্য দিনের মত এদিনও ঠাকুর পুজোর জন্য বাড়ির বাগানে থাকা ফুল গাছ থেকে ফুল তুলতে যায় কিশোরী রিঙ্কু ক্ষেত্রপাল।তখনই কিশোরীর ডান পায়ে ছোবল মারে বিষধর সাপ ।সাপের ছোবল খেয়েই আর্তনাদ শুরু করে কিশোরী।সেই আর্তনাদ শুনেই পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে রিঙ্কুকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ছোবল মারা বিষধর সাপটিকে একটি বালতিতে ভরে ফেলে । তারা কাপড় দিয়ে কিশোরীর ডান পায়ে দুটি বাঁধন দিয়ে দেন ।
এরপর আর এক মুহুর্ত দেরি না করে বালতিতে ভরে রাখা ছোবল মারা সাপ সহ কিশোরী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ছুটে যান পরিবারের লোকজন । মেয়েটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য তারা চিকিৎসকদের কাছে কাতর ভাবে আবেদন জানান।কিন্তু কিছু আর করা যায় না।হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
চোখের জল মুছতে মুছতে মৃতার বাবা নিখিল ক্ষেত্রপাল এদিন বলেন,’ঠাকুর পুজো করার জন্য সকাল সাতটা নাগাদ বাড়ির বাগানে থাকা ফুলগাছ থেকে মেয়ে ফুল তুলতে যায়। ষেই গাছের কাছেই একটা কাঠের গুঁড়ি ও কিছু টালি রাখা ছিল । সেখানে ঘাপটি মেরে থাকা একটা বিষধর সাপ আমার মেয়ে ডান পায়ে ছোবল মারে । পা দিয়ে ঝরঝর করে রক্ত ঝরে পড়ছিল। তারপরেই ঘটনার কথা ওর মাকে জানায়। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই মেয়ে পথে ঢলে পড়ে। আর কথা বলতে পারছিল না। হাসপাতালে ভর্তিও করি। কিন্তু মেয়ে আর প্রাণে বাঁচানো যায় নি।এদিনই কালনা হাসপাতাল মর্গে ছাত্রীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় ।
ছোবল মারা সাপটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে মৃতার আত্মীয়রা বলেন,কি ধরণেরব সাপ কামড়েছে সেটা চিকিৎসক নিজের চোখে দেখে নিতে পারলে চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে। এমনটা মনে করেই আমরা বিষধর সাপটিকে ধরে বালতিতে ভরেনিয়ে হাসপাতালে পৌছে গিয়ে ছিলাম। কিন্তু কিছুতেই কিছু লাভ হল না । আমরা চিরতরে আমাদের মেয়েটাকে হারালাম ।।