প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৬ মার্চ : গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিটি, নতুন কোন ঘটনা নয় । তবে রবিবার বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের কর্মসূচীতে যা ঘটলো তাকে বিচিত্র ঘটনা বললেও কম বলা হয়। দলীয় কর্মসূচীতে টিফিনের প্যাকেট পাওয়া নিয়ে ঘটে গেল তুলকালাম কাণ্ড। টিফিনের প্যাকেট পাওয়া নিয়ে কর্মীদের মধ্যে রীতিমত হাতাহাতি বেধে যায়। তাতে আহতও হন কয়েকজন।এমনকি কয়েকজনের পদপিষ্ট হবার উপক্রমও হয়। যদিও এমন ঘটনার জন্য বিজেপি ও কংগ্রেসের উপর দোষ চাপিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র কসুর করেননি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সংখ্যালঘু সেল এদিন বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে কর্মসূচীর আয়োজন করে।জয়প্রকাশ মজুমদার, মমতাজ সংঘমিতা, উজ্জ্বল প্রামাণিক প্রমুখ নেতা নেত্রীরা কর্মসূচীতে যোগ দেন। জেলার নানা প্রান্ত দলের সংখ্যালঘু কর্মীরা দলের এই কর্মসূচীতে অংশ নেয় ।পঞ্চায়েত ভোটে দলের নেতা কর্মীদের ইতিকর্তব্য কি হবে তা নিয়ে রাজ্যনেতারা বক্তব্য রাখছিলেন।
ওই সময়েই কর্মীদের কাছে খবর যায় খাবারের গাড়ি এসেছে। আর তাতেই সভা চলাকালীন তাল কাটে। সভার ঘর থেকে বেরিয়ে শ’য়ে শ’য়ে কর্মী ঝাঁপিয়ে পড়েন খাবার বোঝাই ছোট গাড়ির উপর। খাবার পাওয়া নিয়ে হুলস্থুল বেঁধে যায়৷খাবারের প্যাকেট নিতে গিয়ে হুড়োহুড়ি মধ্যে পড়ে অনেকে আহত হন। খাবারের প্যাকেট ছিনিয়ে নেওয়া শুরু হলে অনেক খাবারের প্যাকেট ভাটিতে ছিটকে পড়ে। এই অবস্থার মধ্যে অনেকে খাবার আর পান না। খাবার না পেয়ে অনেকে ক্ষোভে ফেটে পড়লেও সুযোগসন্ধানী কেউ কেউ সাত আট প্যাকেট খাবার বাগিয়ে নেয় । তা নিয়েও ক্ষোভ ছড়ায় ।
কর্মসূচীতে যোগ দেওয়া কর্মী ওয়েবেদুল হক ও আরও এক কর্মী বলেন,আমরা অনেক দূরদূরান্ত থেকে এসেছি। খাবার তো দূরের কথা জলটুকুও পান নি। অসুস্থ যাঁরা এসেছে তারাও কিছু পান নি৷ অথচ কিছুজন দশটা করে খাবারের প্যাকেট নিয়ে গেছে। মারধর,ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত হয়েছে। খাবার নিয়ে সুষ্ঠ ব্যবস্থা রাখা উচিৎ ছিল বলে কর্মীরা জানিয়েছেন ।
দেখুন ভিডিও 👇
কর্মীরা এমনটা জানালেও বিশৃঙ্খলার কথা মানতে চান নি জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শেখ আসরাফুদ্দদিন। তাঁর কথায়,লোকমঞ্চে আসন সংখ্যা ষোলোশো। কিন্তু কর্মী এসেছে তিন হাজার। তাই একটু উনিশ বিশ তো হতেই পারে। তবে সবার খাবার ছিল। সবাই খাবার পেত। মারপিট ; ধাক্কাধাক্কি নিয়ে আসরাফুদ্দদিনের বক্তব্য, বিজেপি আর সিপিএম সভায় লোক ঢুকিয়ে দিয়ে এই ঝামেলা বাঁধিয়েছে“।এই অভিযোগ খণ্ডন করে
বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন,“নিজেদের ঝামেলা এখন বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়ে কি মান বাঁচানো যাবে। সবাই জানে ওখানে কি হয়েছে”।
কংগ্রেস নেতা গৌরব সমার্দার বলেন,“নিজেদের কর্মীদের সামলাতে না পেরে কংগ্রেসের উপর দোষ দিয়ে কিছু হবে না।বাংলার মানুষ তৃণমূলকে চিনে গেছে ।।