এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৫ মে : বাড়ির ছাদের শিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়ে বছর পনেরোর এক কিশোর । তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন । কিন্তু মৃতদেহটি বাড়ি নিয়ে আসতেই হাত-পা নাড়াচাড়া ও চোখের পাতা অল্প খুলে যায় বলে দাবি পরিবারের । ফের দেহটি আনা হয় হাসপাতালে । কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন যে অনেক আগেই ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে । ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের । এই ঘটনার পর মৃত কিশোর দীপ সাহার (১৫) পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা কাটোয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফেলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । তাদের দাবি যে ওই কিশোরকে জীবিত অবস্থাতেই মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল ।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাটোয়া হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুশান্তবরণ দত্ত । তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল । চিকিৎসকরা যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন । মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করার কথাও বলা হয় । বাড়ির লোকজন ময়নাতদন্ত না করিয়েই দেহ নিয়ে চলে যান ।’ কিন্তু মৃত ঘোষণার পরেই শরীরের বিভিন্ন অংশ নাড়াচাড়া করার কারন কি ? এই বিষয়ে তিনি জানান, চিকিৎসার পরিভাষায় একে “রাইগর মর্টিস” বলা হয়ে থাকে । অর্থাৎ মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে মৃতদেহের মাংশপেশীর পরিবর্তন হতে শুরু করে । তখন পেশিতে টান পড়ে । সেই কারনে মনে হয় মৃতদেহ নাড়াচাড়া করছে ।
জানা গেছে,কাটোয়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার টালিখোলা চৌরঙ্গী মোড় এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণপদ সাহা ও সুমিত্রাদেবীর দুই ছেলের মধ্যে ছোট দীপ । সে কাটোয়া ভারতীভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। আজ সকালে বাড়ির পোষ্য বিড়ালটি কোলে নিয়ে বাড়ির ছাদে ঘোরাঘুরি করছিল দীপ । কিন্তু বিড়ালটিকে আদর করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামার সময় হঠাৎ সে নিচে পড়ে যায় । পড়তেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ।
দীপের দাদা চন্দন সাহা বলেন,’ভাইকে দ্রুত কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । কিন্তু চিকিৎসকরা জানান যে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে । এরপর আমরা দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি । কিন্তু বাড়িতে আসার কিছুক্ষণ পরে লক্ষ্য করি ভাইয়ের হাত পা নড়ে ওঠল । এমনকি চোখের পাতাও কিছুটা খুলে গেল । কাল বিলম্ব না করে ফের ভাইকে হাসপাতালে আনা হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে বলেন যে ভাইয়ের অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে ।’
জানা গেছে,দ্বিতীয়বার কিশোরের মৃতদেহটি হাসপাতালে আনার সময় পরিবার পরিজন ছাড়াও প্রচুর সংখ্যায় প্রতিবেশীরা হাসপাতালে এসেছিলেন । তাদের দাবি যে প্রথমবার কিশোর জীবিত থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেছিলেন । প্রথমে ঠিকমত চিকিৎসা হলে কিশোরের মৃত্যু হত না বলে দাবি করেন তারা । এনিয়ে তারা হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের জেরে হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ৷ শেষে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়িন্ত্রনে আনে । কিশোরের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর বিকেলের দিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ।।