এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ নভেম্বর : আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক ‘অভয়ার’ ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি হলো একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার । তারপর থেকেই বিতরকের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য পুলিশে সৃষ্ট নতুন অস্থায়ী পদ সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে । গত অক্টোবর মাসে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দায়িত্বের দেওয়ার সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট । এবার এই সিভিক ভলেন্টিয়ার দের বিরুদ্ধেই তৃণমূলের হয়ে উপনির্বাচনের প্রচার করার অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বিশেষ ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দাবি করেছেন যে কাজ সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং তৃণমূলে হয় নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে ।
এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন,’সম্প্রতি, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত), বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের একটি বেঞ্চ, আরজি কর মামলার শুনানি করার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন যে, “সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ অযাচাইকৃতদের রাজনৈতিক ব্যক্তির পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের জন্য একটি প্রক্রিয়া হতে পারে না।” এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে তাদের নিয়োগ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে একটি হলফনামা দাখিল করতে বলেছেন । বৃহস্পতিবার দাখিল করা হলফনামায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রশাসনিক আদেশের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বীকার করেছে যে স্থানীয় পুলিশ স্টেশন এলাকার বাসিন্দা সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পুলিশ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি কাজ করার এবং পুলিশকে সহায়তা করার জন্য তারা সচেতন। এলাকার তাদের দেওয়া সম্মানী স্বরাষ্ট্র বিভাগ বহন করে।’
এরপর শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, ‘রাজ্য সরকার হলফনামায় উল্লেখ করুক বা কৌশলগতভাবে লুকিয়ে রাখুক না কেন, মাননীয় বিচারপতিদের আশঙ্কা যে নাগরিক স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ অপ্রমাণিত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করছে, এটি ধ্রুব সত্য। এই সাথে সংযুক্ত এই ছবির দিকে তাকান…তীরচিহ্নে চিহ্নিত ব্যক্তির নাম ভীম মণ্ডল। তিনি বাঁকুড়া জেলার ইন্দপুর থানার সাথে যুক্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। এখানে তাকে পার্শ্ববর্তী তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রে টিএমসি প্রার্থীর জন্য প্রচার করতে দেখা যেতে পারে, যেখানে ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর-এ একটি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এইভাবে পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপি জুড়ে পূর্বে প্রসারিত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা শোধ করা হয় ।’
প্রসঙ্গত,গত অক্টোবর মাসে আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন,থানা, স্কুল, হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাঁরা ডিউটি করেন কি না, রাজ্যকে তা আদালতের কাছে জানাতে হবে । প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ,যাচাই না করে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ এবং তাঁদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া রাজনৈতিক পক্ষপাতের নমুনা। আদালত লিখিতভাবে রাজ্যের কাছে জানতে চায় যে পশ্চিমবঙ্গে মোট কতজন সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন, কারা সিভিকদের নিয়োগ করেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, এবং কীভাবে এদের বেতন দেওয়া হয় ।প্রধান বিচারপতি দিপাবলীর পরের শুনানিতে রাজ্যকে হলফনামার আকারে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷।