এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেইজিং,০২ আগস্ট : চীনের কমিউনিস্ট শাসন ব্যবস্থায় অবর্ণনীয় দূর্দশার মধ্যে রয়েছে উইঘুর মুসলমানরা । ইসলামিক টুপি পরা থেকে শুরু করে নামাজ পড়ার উপরে রয়েছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ । এছাড়া চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ উইঘুর মুসলিমকে,যাদের অধিকাংশই মহিলা । এখন জানা যাচ্ছে যে উইঘুর মুসলিমদের উপর নজরদারি রাখার জন্য প্রতিটি পরিবার পিছু একজন করে চীনা কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে । ওই কর্মকর্তা উইঘুর মুসলিমদের শূকরের মাংস খেতে ও মহিলাদের এক বিছানায় শুতে বাধ্য করে বলে খবর।
জানা গেছে,চীনে তৈরি করা ‘প্রেয়ার আপ অ্যান্ড বিকাম ফ্যামিলি’ নামে নতুন স্কিম অনুযায়ী উইঘুর মুসলিম পরিবারগুলিকে নিয়মিত চীনা কর্মকর্তাদের । ‘আত্মীয়’ হিসেবে তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাতে হবে ৷ তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যের মত মেলামেশা করতে হবে । ওই কর্মকর্তাদের তারা নিজেদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতামত সম্পর্কে জানাবে । চাপিয়ে দেওয়া ‘আত্মীয়’দের সাথে একসাথে কাজকর্ম, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে ঠান্ডার সময় একই বিছানায় ঘুমতে পর্যন্ত হয় উইঘুর মুসলিম মহিলাদের । এদিকে সরকারি ‘আত্মীয়’রা উইঘুর মুসলিম পরিবারগুলোকে চীনের আঞ্চলিক নীতি এবং চীনা ভাষা শেখায়। তারা তাদের সাথে মদ এবং শুকরের মাংস নিয়ে আসে এবং মুসলমানদের খেতে বাধ্য করে । ইসলামে শুকরের মাংস হারাম বলে বিবেচিত । তবুও প্রাণের ভয়ে খেতে বাধ্য হয় তারা । চীনা কর্মকর্তাদের দাবি যে এই স্কীম একে অপরকে জানতে এবং বুঝতে সাহায্য করে এবং সমাজে ঐক্য আনে । এমনকি চীন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে এখনো পর্যন্ত উইঘুর মুসলিম মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি ।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে যে মহিলাদের উপর যৌন হয়রানি হলেও কোনো উইঘুর মুসলিমের এই ‘হোম স্টে’ স্কিমের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানোর অধিকার নেই । সংগঠনগুলো একে গোপনীয়তা ও মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে । সংগঠনের দাবি, ওই স্কীমের আওতায় আদপে উইঘুর মুসলিম পরিবারগুলির উপর নজরদারি রাখার জন্য ওই সমস্ত চীনা কর্মকর্তাদের তাদের বাড়িতে আত্মীয় সাজিয়ে পাঠানো হয় ।
তবে এটা সত্য যে গোটা বিশ্বজুড়ে যখন ইসলামি সন্ত্রাসবাদ ও কট্টরপন্থী মানসিকতা ত্রাসের সৃষ্টি করেছে,তখন অন্যদিকে চীনে সন্ত্রাসবাদী হামলার কোনো নজির নেই । এই দিক থেকে নিজের দেশকে অনেকটাই সুরক্ষিত রেখেছে শি জিংপিং সরকার ।।