এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৫ অক্টোবর : যে দেশেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে সেই দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তারা বড়সড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে । রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা এবং সেই সঙ্গে ধর্মের অজুহাতে দ্রুতহারে বংশ বৃদ্ধি একটা দেশের আইনশৃঙ্খলা এবং ওই দেশের মূল জনজাতির কাছে বিপদ সঙ্কেত । আর একথা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বাংলাদেশ । বিভিন্ন অপরাধমূলক আচরণের কারণে ২০১৭ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় । মানবিক কারন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ স্বজাতীয় রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির করে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা । এখন ওই সমস্ত রোহিঙ্গাদেরই তাড়াতে শেখ হাসিনা কখনও ভারত, কখনও জাতিসংঘ, এখন চীনের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
এদিকে সুবিধাবাদী, সম্প্রসারণবাদী লাল চীনও রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করার কথা দিয়েছে ।
জানা যাচ্ছে,ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ডঃ এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন । চীনের উদ্যোগে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপের পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যেই এই বৈঠক বলা হচ্ছে । তবে অন্য আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, চীনা রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের জন্য ভিন্ন সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন । তার মধ্যে তিনি ধীরে ধীরে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন । উল্লেখ্য, সীমান্ত অপরাধী এবং বাংলাদেশী অভিবাসীদের সহায়তার জন্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেশ কয়েকটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ । নরেন্দ্র মোদি সরকারও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে । রোহিঙ্গাদের অবাধে ভারতে ঢোকাতে কাঁটাতারের বেড়া বিহীন ওই সমস্ত রাস্তাকেই বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
কিন্তু রোহিঙ্গা নিয়ে কেন এত আশঙ্কিত বাংলাদেশ ? বলা হচ্ছে,বাংলাদেশের কক্সাবাজারে শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোগিঙ্গা দুষ্কৃতীদের একাধিক গ্রুপ রয়েছে । তারা কর্তৃত্ব দখলের লড়াইয়ে লিপ্ত । গ্রুপগুলির মধ্যে মারামারি, হত্যা নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে । গত পাঁচ বছরে শুধুমাত্র কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই ১২০ টিরও বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা উপগোষ্ঠীর বিভিন্ন স্তরের নেতা। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১৪টি বিভিন্ন অপরাধে রোহিঙ্গারা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে । খুন ছাড়াও অপহরণ, ধর্ষণ, প্রতারণা, মাদক ব্যবসা ও অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রোহিঙ্গা দলগুলো । পুলিশ প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক হাজার ৯০৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
তবে শুধু আইনশৃঙ্খলাই নয়,রোহিঙ্গাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাও বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে । প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার শিশুর জন্ম হচ্ছে রোহিঙ্গা শিবিরে । বিগত ৫ বছরে দেড় থেকে দু’লাখ জনসংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশের রোগিঙ্গাদের বর্তমান জনসংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১২ থেকে ১৩ লাখ । ফলে এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার খাবার জোটাতে হিমসিম খাচ্ছে হাসিনা সরকার ।
এখন ওই বিপুল পরিমান রোহিঙ্গা জনজাতি গোষ্ঠীকে বাংলাদেশ যদি চীনের পরামর্শে ভারতে ঢোকাতে শুরু করে তাহলে এদেশে কি ঘটতে চলেছে তা সহজেই অনুমেয় । জম্মু থেকে দিল্লি পর্যন্ত বিভিন্ন পথ দিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক লাখ রোহিঙ্গা ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর । রোহিঙ্গারা তাদের শক্তি বাড়াতে দ্রুত প্রজনন করছে । রোহিঙ্গা উপনিবেশগুলো পরিণত হয়েছে অপরাধীর ঘাঁটিতে । তাই বাংলাদেশের ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা ভারতে প্রবেশের সম্ভাবনা দেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ।।