এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৭ ডিসেম্বর : শনিবার সন্ধ্যা থেকে আচমকা উধাও হয়ে যান নিঃসন্তান দম্পত্তি । বাড়ির গেটের বাইরে থেকে তালা ঝোলানো । দম্পতির ফোনেও যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবারের লোকজন,কারন সুইচ অফ ছিল । শেষ পর্যন্ত পুলিশের পরামর্শে আজ মঙ্গলবার বিকেলে তারা গেটের তালা ভেঙে ঢুকতেই শোবার ঘরে বৃদ্ধের মুখে ও গলায় গামছা জড়ানো লাশ ও বৃদ্ধার মৃতদেহ দেখতে পান রান্নাঘরে । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের রবীন্দ্রপল্লী এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে,মৃত দম্পতির নাম অভিজিৎ যশ (৭২) এবং সবিতা যশ (৬৫)। পরিবারের একাংশের অভিযোগ সম্পত্তির লোভেই পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে ওই নিঃসন্তান দম্পতিকে । পুলিশ জানিয়েছে, আগামী কাল মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরের মৃত্যুর কারন জানা যাবে ।
জানা গেছে,ভাতার গ্রামে আদি বাড়ি অভিজিৎ যশের । পেশায় ব্যবসায়ী অভিজিৎ যশ এলাকায় অভি নামে পরিচিত । প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হওয়ায় এলাকার মানুষ তাকে এক ডাকে চিনত । অভিজিৎবাবুর শ্বশুরবাড়ি ভাতার গ্রামের পার্শ্ববর্তী পালাড় গ্রামে । তিনি নিঃসন্তান ছিলেন । আগে বাজারের কদমতলায় তার বাড়ি ছিল । বাড়ির নিচের তলায় ছিল তার দোকান । বছর দুয়েক আগে কদমতলার বাড়ি বিক্রি করে রবীন্দ্রপল্লীতে নতুন বাড়ি তৈরি করে স্বামী-স্ত্রী মিলে বসবাস করছিলেন । বয়সের কারণে ব্যবসাও বন্ধ করে দেন তিনি । নিরীহ স্বভাবের ওই দম্পতির সঙ্গে আশপাশের বাসিন্দাদের যথেষ্ট সুসম্পর্কও ছিল । সাধারণত তারা বাড়ির ভিতরেই কাটাতেন । তবে মিশুকে অভিজিৎবাবু দুবেলা বাজারহাট করতে বেরিয়ে পরিচিতদের সঙ্গে গল্পগুজব করতেন। পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তার ।
স্থানীয় সূত্রে খবর,গত শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অভিজিৎবাবু ও তার স্ত্রী সবিতাদেবীকে আর দেখা যাচ্ছিল না । বাড়ির সদর দরজাতেও তালা ঝোলানো ছিল । সেই কারনে প্রতিবেশীরা অনুমান করেন যে দম্পতি কোথাও বেড়াতে গেছেন । মৃত সবিতাদেবীর বোন শ্যামলী কোনার জানান যে তার দিদির মোবাইল ফোনে কল করলে দু’দিন ধরে সুইচ অফ বলছিল । বাধ্য হয়ে আজ ভাতার থানায় নিখোঁজ ডাইরি করতে যান । তখন পুলিশ বাড়ির তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখার পরামর্শ দেয়৷
জানা গেছে,আজ বিকেলে শ্যামলী কোনার এক নাতনি সহ কয়েকজন তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন । জামাইবাবুকে দেখেন অভিজৎবাবুর দেহ উবু হয়ে পড়ে রয়েছে শোবার ঘরে। মুখে ও গলার কাছে গামছা গামছা। দিদি সবিতাদেবীর দেহটি রান্নাঘরে পড়ে থাকতে দেখেন । খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসে ভাতার থানার পুলিশবাহিনী । প্রচুর লোকজন জড়ো হয়ে যায় । শ্যামলীদেবী জানান,বাড়ির সদর দরজা এবং কোলাপসিবল গেলে বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল । তাই এটা ডাকাতির ঘটনা নয় । তার সন্দেহ, সম্পত্তির লোভেই ঘনিষ্ঠ কেউ বা কারা তার দিদি ও জামাইবাবুকে খুন করেছে । পুলিশ জানিয়েছে,ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।।