প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ নভেম্বর : নাবালক স্কুল পড়ুয়ারা রাজনীতির কতটা কি বোঝে তা সকলেরই জানা।তবুও পতাকা-ব্যানার হাতে ধরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক দলের মিছিলে স্কুল পড়ুয়াদের হাটানো চলছেই।রবিবার দুপুরে শহর বর্ধমানে ডিওয়াইএফআই এর ‘ইনসাফ যাত্রাতেও এর কোন ব্যতিক্রম দেখা গেল না। সংগঠনের পতাকা-ব্যানার হাতে নিয়ে ওইসব খুদেদেরও বড়দের সঙ্গেই ’ইনসাফ যাত্রায়’ পা মেলাতে দেখা গেল। সংগঠনের প্রবীণদের কাউকেই ওই খুদেদের ইনসাফ যাত্রায় পা মেলানো থেকে বিরত করতেও দেখা গেল না। যদিও ’ইনসাফ যাত্রার’ ব্যানারে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল ,“যৌবনের ডাকে জনগণের ব্রিগেড“-কে সামনে রেকেই এই ইনসাফ যাত্রা।
বিষয়টি জানার পর রাজ্যের শিশুসুরক্ষা কমিশনও
অসন্তোষ চেপে রাখে নি । কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় বলেন,’ঘটনার কথা শুনেছি। এই ধরণের ঘটনায় ‘শিশু সুরক্ষা’ লঙ্ঘন হচ্ছে।ঘটনার তদন্ত করে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট দিতে বলব ।’
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এর ’ইনসাফ যাত্রা’ রবিবার ২৪ তম দিনে পৌছেচে। শনিবার ইনসাফ যাত্রা জেলার জামালপুরে পৌছায় । এদিন জামালপুর থেকে রায়না-খণ্ডঘোষ হয়ে ’ইনসাফ যাত্রা’ তেলিপুকুর হয়ে শহর বর্ধমান পৌছায়।ওই ’ইনসাফ যাত্রার’ পদযাত্রায় ডিওয়াইএফের রাজ্যের সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ছাড়াও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাষ রায়চৌধুরি,চিত্র-পরিচালক
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়রা-রা পা মেলান। পদযাত্রায় ব্যান্ড-সহ নানা রকম বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সংগঠনের তরুণ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। তারই মধ্যে নজরকাড়া ছিল সংগঠনের পতাকা ও ব্যানার হাতে নিয়ে ’খুদেদের’ ইনসাফ যাত্রায় পা মেলানো ।
’ইনসাফ যাত্রার’ মিছিলটি বরতেলিপুকুর থেকে ম পারবীরহাটা মোড়ে পৌছানোর পর একদল নাবালক, নাবালিকাকে ফুল দিয়ে ডিওয়াইএফের নেত্রী মিনাক্ষীকে সম্বর্ধনা জানাতে দেখা যায় । বীরহাটা সেতু থেকে পদযাত্রা এগোনো শুরু করলে
তখন ডিওয়াইএফের সংগঠনের পতাকা ও ব্যানার হাতে নিয়ে একদল খুদেকেও হাঁটতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা প্রত্যেকেই স্কুল পড়ুয়া। ওই খুদেদের কাছে ’ইনসাফ যাত্রার’ উদ্দেশ্য বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা শুধু বলে,’আজকের মিছিলে বাড়ির সবাইকে থাকার কথা বলেছিল। তাই বাড়ির অন্যরা মিছিলে যোগ দিয়েছে ,আমরাও যোগ দিয়েছি ।’
এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি শাসক দলের নেতৃত্ব । তৃণমূলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার বলেন,’মানুষ আর পাশে না থাকলে যা হয়। তাই ভিড় বাড়াতে ওদের এখন কচিকাঁচারাই ভরসা। অথচ এ নিয়ে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। এতে শিশু সুরক্ষা লঙঘিত হয়েছে।আমি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের
দৃষ্টিতে আকর্ষণ করবো ।’
যদিও মিছিলে থাকা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষ বলেন,’একটা কথা আছে -যারে দেখতে নারী ,তার চলন বাঁকা’ । তৃণমূলের
অবস্থাটা এখন এ রকমই হয়েছে।’ বিনোদ জানান ,
ওই খুদেরা মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দিতে আসে । তার পর তাঁরা খুশিতে পদযাত্রায় খানিকটা হেঁটে চলে যায় ।ওদের বাবা-মায়েরা ইনসাফ চাইতে মিছিলে পা মিলিয়েছিল । তাই ওই খুদেরা তাঁদের বাবা- মায়ের সঙ্গেই চলে এসেছিল । কেউ জোর করে ওদের মিছিলে পা মেলাতে বলেনি। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তৃণমূল এ নিয়ে জলঘোলা করছে।’ আর ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক অয়নাংশু সরকার দাবি করেন,’বর্ধমান শহরের মিছিলে তিনি কোন কচিকাঁচাকে হাঁটতে দেখেননি।’।