এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ ডিসেম্বর : রাজ্যবাসীকে বিনা পয়সায় রেশন কেন্দ্র নয়, বরঞ্চ রাজ্য সরকার দিচ্ছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । আজ বৃহস্পতিবার উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দেগঙ্গায় দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই মন্তব্য করেছেন । অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন,’নির্বাচন আসলে বিজেপি ঘোষণা করে বিনা পয়সায় রেশন দেবে৷ ‘আমি ৫ কেজি চাল দেবো’- আরে আমরা তো প্রথম থেকেই দিই, আমরা তো চালাচ্ছি । ২০২১ সালে আমাদের যখন সরকার আসার আগে আমরা তিনটে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম- বিনা পয়সায় রেশন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ও লক্ষ্মীর ভান্ডার,সব দিয়েছি । আমরা বলেছিলাম ছাত্রদের স্মার্টকার্ড দেবো, আমরা স্মার্টকার্ডও দিতে শুরু করেছি । ক্লাস নাইনে উঠলে সবুজ সাথি সাইকেল পায়,জানুয়ারীর মধ্যে এবছর সাইকেল দেওয়া শেষ হবে । টুয়েলভে স্মার্টফোন পাচ্ছে,জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারীর মধ্যে সবাই স্মার্টফোন পেয়ে যাবে । আমাদের মত সামাজিক প্রোগ্রাম কেউ করে না ।’
তিনি বলেন,’রাজ্যের ৯৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভাইবোনেরা ওবিসির মধ্যে ঢুকে গেছে,১৭ শতাংশ রিজার্ভেশনের মধ্যে,কেউ একাজ করতে পারেনি । আমাদের এখানে সংখ্যালঘু ভাইবোনেরা মাথা তুলে দাড়াচ্ছেন৷ শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের দ্বারা তফসিল ভাইবোনেরা উন্নত হচ্ছেন,তারা তফসিলি বন্ধু পেনশন পাচ্ছেন । আদিবাসীরা জয় জোহর পেনশন পাচ্ছেন ।’
দুর্নীতির অভিযোগে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’কেন্দ্র সরকার আমাদের সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে । ১০০ দিনের কাজের টাকা পর্যন্ত দেয়নি, তা সত্ত্বেও ৪৫ দিন রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় আমরা ১০০ দিনের কাজ করেছি নানা রকম ভাবে,যাতে গরীব মানুষ ক্ষুধায় না মরে ।’
কর্মীসভায় যোগ দেওয়ার আগে এদিন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার লোকনাথ বাবার চাকলা ধামে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । তিনি লোকনাথ বাবার পূজো এবং বাবা লোকনাথের জীবন ও আদর্শ নিয়ে লেখা একটি বইয়ের উদ্বোধনও করেন । মুখ্যমন্ত্রী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে লেখেন,’চাকলা ধামে বাংলা ও আমার প্রিয় দেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করছি।’ পাশাপাশি রাজ্যের পর্যটন শিল্প নিয়ে তিনি লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের জন্য একটি শীর্ষ গন্তব্য হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে – বিশেষত ধর্মীয় পর্যটনের জন্য, আমাদের রাজ্যে সমস্ত ধর্ম মিলে প্রায় ৪০০ টি পশ্চিমবঙ্গ সর্বদা পবিত্র স্থানগুলির উন্নয়ন এবং গৌরব বৃদ্ধি করার দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে – তা ঠাকুরনগর, গঙ্গাসাগর, ফুরফুরা শরীফ, তারাপীঠ বা দীঘার জগন্নাথ মন্দিরই হোক। রাজ্য জুড়ে মন্দির, একটি মসজিদ, একটি গুরুদুয়ারা, জাহের থান বা গির্জার মতো পবিত্র ধর্মীয় স্থানগুলির পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ৪০০ কোটিরও বেশি ব্যয় করা হয়েছে । মতুয়া সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্যও পশ্চিমবঙ্গ সরকার অক্লান্তভাবে কাজ করেছে ।’
তিনি আরও লেখেন,’সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষদের দ্বারা উদযাপন করা উৎসব এবং বিশেষ দিনগুলির জন্য রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি এবং বাংলায় আমরা নিশ্চিত করেছি যে মানুষ জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি উৎসব উদযাপন করবে ।
আপনার মঙ্গল এবং সুখের জন্য, আমরা কোন কসরত রাখব না এবং সর্বদা নিশ্চিত করব যে সারা বিশ্বের লোকেরা আরামে সমস্ত ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করতে পারে এবং তাদের আন্তরিক প্রার্থনা করতে পারে। আমরা জনগণের মধ্যে শান্তি, সম্প্রীতি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করি এবং উন্নয়নের পথে কাউকে পিছিয়ে রাখি না ।’।