প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ জানুয়ারী : ডিএল-এড পরীক্ষাকেন্দ্রে যেন ঘটে গেল বস্ত্র হরণের মত কাণ্ড।টুকলি রুখতে মহিলা পরীক্ষার্থীদের শরীর থাকা সমস্ত পোষাক খুলিয়ে চেকিং চালানোর অভিযোগ উঠলো পূর্ব বর্ধমানে। এ নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানালেন বেশ কয়েকজন মহিলা পরীক্ষার্থী। তাঁদের অভিযোগ ,চেকিংয়ের নামে তাঁদের একপ্রকার নগ্ন করিয়ে শ্লীলতাহানির করা হয়েছে। তাই তাঁরা গোটা ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও জেলা স্কুল পরিদর্শকের দপ্তরে অভযোগ জানিয়েছেন। এমন অভিযোগ পাবার পরেই তদন্ত নেমেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দ্রুত তদন্ত শেষ করে জেলা পার্থমিক শিক্ষা সংসদকে রিপোর্ট দিতে বলেছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ।
ডিএল-এড ’পার্ট টু’ পরীক্ষা শুরু হয়েছে ১৭ জানুয়ারী থেকে । বর্ধমানে তালিতের গৌড়েশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়েও সেই পরীক্ষা হয় । শুক্রবার ছিল পরীক্ষার শেষ দিন। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ,
টুকলি রুখতে চেকিংয়ের নামে বৃহস্পতিবার গৌড়েশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলা পরীক্ষার্থীরের কার্যত বস্ত্র হরণের মুখে পড়তে হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এক পরীক্ষার্থী জানান,’সব পরীক্ষার্থী দের চেকিংয়ের মুখোমুখি হতে হয় । তার মধ্যে খুবই আপত্তিকর ভাবে মহিলা পরীক্ষার্থীদের পোষাক খুলিয়ে চেকিং করা হয়েছে । আর চেকিংয়ের নামে মহিলা পরীক্ষার্থীদেরর সঙ্গে যা ব্যবহার করা হয়েছে সেটা কোন সভ্য সমাজে হওয়ার কথা নয়।ওই পরীক্ষার্থীর অভিযোগ,’অন্তর্বাস সহ সমস্ত পোষাক খুলিয়ে মহিলা পরীক্ষার্থীদের চেকিং করা হয়েছে’।
অপর আর এক পরীক্ষার্থী বলেন,এমন অল্লীল চেকিংয়ের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তাদের পরীক্ষা দিতে বসতেও দেরি হয়েছে। এমন চেকিংয়ের নির্দেশ যিনি দিয়েছেন,তাঁর শাস্তিরও দাবি করেছেন ওই মহিলা পরীক্ষার্থী। এই দুই পরীক্ষার্থী ছাড়াও অপর আরো এক পরীক্ষার্থীও এদিন পরীক্ষাকেন্দ্রে হওয়া চেকিং নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন । তিনি বলেন, ’বৃহস্পতিবার যেটা সবথেকে আশ্চর্যের ছিল, তা হল ,চেকিংয়ের নামে হওয়া সমস্ত অসভ্যতার দায়িত্বে ছিলেন এক মহিলা কর্মী। অথচ ছেলেদের বেলায় এসব চেকিং হয়নি’।বিশেষভাবে সক্ষম এক মহিলা পরীক্ষার্থী বলেন,’আমাকেও চেকিংয়ের সন্মুখিন হতে হয়েছে। ছাড় দেওয়া হয় নি।এমন আপত্তিকর চেকিং নিয়ে পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভ মাত্রা ছাড়িয়েছে বুঝতে পেরে শুক্রবার আর ঘটনার তার পূণরাবৃত্তি ঘটেনি।
পরীক্ষাকেন্দ্র তালিত গৌড়েশ্বর হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক নিখিল কুমার খাঁ এদিন যদিও বলেন, ‘চেকিংয়ের নামে এমনটা যে হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আর যদি হয়েও থাকে সেটা আমাদের জ্ঞাতসারে হয়নি। যাঁরা ডিএল-এড পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরাই পরীক্ষাকেন্দ্রে আলাদা টিম পাঠিয়েছিল। তারাই চেকিং করেছেন।এই বিষয়ের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই । তবে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন,’অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণ হয় তাহলে কেউ ছাড় পাবে না’।
আর পরীক্ষাকেন্দ্রে তল্লাশির দায়িত্বে থাকা সংস্থার প্রতিনিধি তরুণ চক্রবর্তীর সাফাই , যেভাবে চেকিং করে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেভাবেই করা হয়েছে। পরীক্ষাদের আনা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তরুণবাবু দাবি করেন,’পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে গোছা গোছা টুকলি উদ্ধার হয়েছে। পরীক্ষার হলে টুকলি নিয়ে ঢুকতে না পারার জন্যই ওইসব পরীক্ষার্থীরা
এমন মিথ্যা অভিযোগ এনেছে বলে তিনি দাবি করেন।।