প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ জুন : ইন্ডিয়ান অয়েলে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই বেকার যুবকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হল এক প্রতারক ।ধৃতের নাম অনুপম রায়। তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলি গ্রামে ।বর্ধমান থানার পুশিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহর বর্ধমানের বিসি রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।পুলিশ শুক্রবার ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে। সিজেএম ধৃতের জামিন নামাঞ্জুর করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে তাঁকে ২ জুলাই ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণার শিকার হওয়া দুই যুবকের নাম দেব পরামানিক ও তাঁর বন্ধু দীপ ঠাকুর ।দেবের বাড়ি জেলার রায়না থানার হরিপুরে । আর দীপ ঠাকুর মেমারি থানা এলাকার বাসিন্দা । শক্তিগড় স্টেশন এলাকার একটি সেলুনে কাজ করতেন দীপ ।সেখানেই দীপের সঙ্গে অনুপমের পরিচয় হয়।পরিচয়ের সময়ে অনুপম নিজেকে ইন্ডিয়ান অয়েলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বলে পরিচয় দেয়। তিনি দীপকে ইন্ডিয়ান অয়েলে কাজ পাইয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।অনুপমের সেই কথা বিশ্বাস করে দীপ বিষয়টি তাঁর বন্ধু দেবকেও জানায়। পরে দেব এবং দীপ দুজনেই তাঁদের চাকরির জন্য অনুপমকে বলেন। চাকরি পেতে হলে টাকা লাগবে অনুপম তাদের জানায় ।চাকরির জন্যে দেবের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা এবং দীপের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে অনুপম। দীপের বাবা মারা গিয়েছেন। মায়ের গয়না ও জমি বিক্রি করে দীপ সেই টাকা অনুপমকে দেয় ।একই ভাবে দেবও অনেক কষ্টে টাকা জোগার করে অনুপমের হাতে তুলে দেয়। মাস খানেক আগে ট্রেনিংয়ের জন্য দু’জনকে অনুপম শিলিগুড়িতে নিয়ে যায় ।২৫ দিন তারা সেখানে থাকে। থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাতে হয় দেব ও দীপকে। এরপর লকডাউনের কারণে কোম্পানি ট্রেনিং বন্ধ করে দিয়েছে বলে দু’জনকে জানায় অনুপম। তিনজনই শিলিগুড়ি থেকে ফিরে আসে ।
বাড়ি ফিরে অনুপমের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে দুই বন্ধু।তখন তাঁরা জানতে পারেন, অনুপম মেমারি থানার মহেশডাঙা ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা মিহির বিশ্বাসকে ইন্ডিয়ান অয়েলে পাইপ লাইনের কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বেশ কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আরও কয়েকজনকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে সে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে । প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে এরপর দেব ও দীপ তার কাছে টাকা ফেরত চায়। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বৃহস্পতিবার বর্ধমানে আসে অনুপম। কিন্তু, নানা অছিলায় সে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এরপরই দীপ ও দেব অনুপমকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেয়। দেব ঘটনার বিষয়ে ওই দিনই বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ।।