আমাদের সারাদিনের কর্মের শুরুর আগে বিশেষ মন্ত্রজপের কথা বলা আছে বৈদিক শাস্ত্রে । যাতে আমাদের শরীর ও মন বিশুদ্ধ হয় । ঘুম ভাঙার পর থেকে প্রাতঃভ্রমণ পর্যন্ত এমই কিছু মন্ত্র নিচে তুলে ধরা হল :
জাগরণ মন্ত্র
ওম্ উদু তিষ্ঠ স্বধরাবা নো দেব্যা ধিয়া।
দৃশে চ ভাসা বৃহতা শুশুকনিরাগ্নে যাহি সুশস্তিভিঃ । [যজুর্বেদ ১১। ৪১]
ওম্ যো জাগার তমৃচঃ কাময়ন্তে যো জাগার তমু সামানি যন্তি।
যো জাগার তময়ং সোম আহ তবাহমস্মি সখ্যে ন্যোকাঃ ॥ [ঋগ্বেদ ৫।৪৪।১৪]
ভাবার্থঃ হে জীব! উঠো, এগিয়ে যাও। অহিংসা, বুদ্ধি ও বৃদ্ধি লাভ করো ও ভালো কাজের মাধ্যমে যশ লাভ করো। যে জাগ্রত থাকে সে সমস্ত জ্ঞান লাভ করে সত্যিকারের উপাসক হয় ও ভগবানের বন্ধুত্ব লাভ করে।
শৌচপূর্ব জলপান মন্ত্র
ওম্ ইদমাপঃ প্র বহত যৎকিং চ দুরিতং ময়ি।
যদ্বাহমভিদুদ্রোহ যদ্বা শেপ উতানৃতম্ ॥ [ঋগ্বেদ ১।২৩।২২]
ভাবার্থঃ এই জলের যেন অশুভ আচরণ, বিদ্বেষভাব, রাগ ইত্যাদি শারীরিক ও মানসিক যা কিছু মন্দ আছে তা যেন প্রবাহিত হয়ে দূর হয়ে যায় অর্থাৎ আমরা যেন এমন প্রেরণা লাভ করি।
বাহ্য ধৌতকরণ মন্ত্র
ওম্ বাঙ্ম আসন্ নসোঃ প্রাণশ্চক্ষুরক্ষোঃ শ্রোত্রং কর্ণয়োঃ।
অপলিতাঃ কেশা অশোণা দন্তা বহু বাহেবাবলম্ ॥১॥
ওম ঊর্বোরোজো জঙ্ঘয়োর্জবঃ পাদয়োঃ।
প্রতিষ্ঠা অরিষ্টানি মে সর্বাত্মানিভৃষ্টঃ ॥২॥ [অথর্ববেদ ১৯। ৬০।১-২]
ভাবার্থঃ প্রভুর কৃপায় আমার মুখ, নাক, চোখ, উরু, পা তথা সর্বাঙ্গ যেন শক্তিসামর্থ্যযুক্ত হয়।
প্রাতঃভ্রমণ মন্ত্র
ওম্ স্বস্তি পন্থামনু চরেম সূর্যাচন্দ্রমসাবিব।
পুনর্দদতায়তা জানতা সং গমেমহি ॥ [ঋগ্বেদ ৫। ৫১।১৫]
ওম অপি পন্থামগন্মহি স্বস্তিগামনেহসম্।
যেন বিশ্বাঃ পরি দ্বিষো বৃণক্তি বিন্দতে বসু ॥ [ঋগ্বেদ ৬।৫১।১৬]
ভাবার্থঃ সূর্য – চন্দ্রের মত যেন আমরা নিয়মিত নিজের কর্ম করি, জ্ঞানী – দাতা মানবের সৎসঙ্গ করি। আমরা সেই পথেই চলি যে পথ কল্যাণকারী, পাপশূন্য ও দ্বেষভাবনা বিবর্জিত।