এইদিন ওয়েবডেস্ক,বরিশাল,২২ মার্চ : স্বামী ও কন্যা সন্তানকে নিয়েছিল সুখের সংসার । কিন্তু মুসলিম প্রেমিকের প্রেমের ফাঁদে পড়ে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন বাংলাদেশের বরিশাল নগরের শীতলা খোলা এলাকার এক মহিলা । স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে মুসলিম প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে পরকীয়া চালিয়ে যাওয়ার পর প্রেমিক চম্পট দিয়েছে । এখন কিশোরী কন্যাকে সাথে নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন চম্পা বেগম নামে ঐ মহিলা । জুটছেনা দুবেলার খাবার পর্যন্ত ।
জানা গেছে, চম্পার হিন্দু স্বামী শ্যামল চন্দ্র সেন বরিশাল নগরের শীতলা খোলা এলাকার একটি সেলুনে কাজ করতেন । যেখানে চুল দাড়ি কাটতে আসতো হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা হেলালউদ্দিন ফারুক নামে এক মুসলিম ব্যক্তি । সেই সময় শ্যামলের সুন্দরী স্ত্রী চম্পা রানীর দিকে নজর পরে তার । শুরু হয় প্রেমের ফাঁদে ফেলার ষড়যন্ত্র । অবশেষে সফলও হয় সে । মুসলিম প্রেমিক হেলালউদ্দিনের প্রেমের জালে ফেঁসে তার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যাই চম্পা । এরপর তিনি প্রেমিকের কথায় স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন । ধর্মান্তরিত হয়ে চম্পা থেকে তিনি বনে যান মুসাম্মদ চম্পা বেগম৷ চার বছরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে প্রেমিক ফারুকের হাত ধরে বেরিয়ে গিয়ে বিয়ে ছাড়াই সংসার শুরু করেন ।সেই সময় গর্ভে থাকা দুটি সন্তানকে নষ্ট করে দেয় ফারুক । প্রেমিকের জন্য জেলও খেটেছেন চান চম্পা । কিন্তু এত কিছুর পরেও এখন একুল ওকুল দুকুলি হারিয়েছেন চম্পা বেগম । হেলাল উদ্দিন ফারুক এখন চম্পা বেগমকে কোন রকম ভাবেই স্বীকৃতি দিতে চাইছে না । ফলে মেয়ের হাত ধরে পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে তাকে । দুবেলা খাবার ও ঠিকমতো জুটছে না তাদের । মায়ের পরকিয়ার মাসুল গুনতে হচ্ছে তার কিশোরী মেয়েকে ।
চম্পা বেগম বলেন,’২০১৪ সাল থেকে ফারুক আমার হিন্দু স্বামীর দোকানে আসা যাওয়া শুরু করে । আমাকে দেখার পর চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিল । আমি ওর অফিসে তিন বছর চাকরি করেছি । তারপর আমার স্বামীর সঙ্গে আমাকে ডিভোর্স করিয়েছে । বরগুনায় থাকার সময় আমার গর্ভের দুটো সন্তানকে নষ্ট করে দিয়েছে । আমার ধর্ম পরিবর্তন পর্যন্ত করিয়েছে কিন্তু বিয়ে করেনি আমাকে । আমি এখন খুব বিপদের মুখে পড়েছি । আইনগত দিক দিয়ে সমস্যা আছে এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়েও সমস্যা আছি । এখন আমার সব শেষ হয়ে গেছে । আমার আগের স্বামী ও নিতে চাইছে না, এখন আমি কোন কুল খুঁজে পাচ্ছি না । এখন আমি কি করবো ?’
জানা গেছে,চম্পা বেগমের প্রেমিক হেলালউদ্দিন ফারুকের ফিল্টারের ব্যবসা আছে । চম্পাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ানোর পাশাপাশি ব্যাবসায় বিনিয়োগের জন্য চম্পাকে দিয়ে মহাজনের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ করিয়েছিল ফারুক । টাকা পরিশোধ করতে না পারায় চম্পা বেগমকে জেল খাটতে হয় । এমনকি শীতলাখোলা এলাকায় মুদিখানার দোকান পর্যন্ত প্রেমিকের জন্য বিক্রি করে দিয়েছিলেন চম্পা বেগম । সেই টাকা তিনি প্রেমিক ফারুকের হাতে তুলে দেন ।
চম্পা বেগমের কথায়,’ফারুকের আগে বিয়ে হয়েছিল কিনা আমার জানা ছিল না । আমার কাছে এ কথা গোপন করে যায় । আমার কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা আদায় করেছে । আমি সুদে টাকা এনে দিয়েছি ওকে । সেই টাকার শোধ না করতে পারার জন্য আমার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে । জেল ও খাটতে হয়েছে আমাকে । শীতলা খোলায় আমার একটা দোকান ছিল, আমার খুব সুন্দর একটা সংসার ছিল এবং আমি খুব ভালোই ছিলাম । এখন প্রেমিকের কারণে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি ।’
জানা গেছে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে চম্পার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে হেলালউদ্দিন । বিয়ে করছি,করব,একটু ধৈর্য ধরো বলে দীর্ঘ ১০ বছর প্রেমিকাকে সে ঝুলিয়ে রাখে । মাস দুয়েক আগে বরগুনা জেলা সদরে একটি বাড়ি ভাড়া করে সেখানে চম্পা এবং তার মেয়েকে নিয়ে তোলে হেলাল উদ্দিন ফারুক । স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে পড়ে সপ্তাহখানেক আগে কাজী অফিসে গিয়ে দশ লাখ টাকা দেনমোহরে চম্পা কে নিকাহ করে ফারুক । এরপর থেকেই চম্পার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে প্রতারক প্রেমিক । এখন সবকিছু হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন চম্পা বেগম । তিন বেলা খাবার মিলছে না ঠিকমত । মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না । কারণ স্কুলে ভরা ভর্তি করতে গেলে বাবার পরিচয় প্রয়োজন । জানা গেছে, চম্পা রা চার বোন এবং এক ভাই । মুসলিমের হাত ধরে বেড়িয়ে যাওয়ায় বাপের বাড়িতেও ঠাঁই হয়নি তার ।।