এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৪ জুন : পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের সময় থেকেই কল কারখানার গেটে তালা ঝুলতে শুরু করেছে । ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি । নতুন কল কারখানা স্থাপন তো দুরের কথা, পুরনো কল কারখানা পর্যন্ত ঝাঁপ বন্ধ করে দিতে শুরু করেছে৷ এবার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটানিয়া কোম্পানী । কলকাতার তারাতলায় কোম্পানীর উৎপাদন বন্ধের নোটিশ করা হয়েছে৷ গত ২০ জুন কোম্পানীর তরফ থেকে জারি করা ওই নোটিশে বলা হয়েছে,’সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (লিস্টিং বাধ্যবাধকতা এবং প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা) রেগুলেশন, ২০১৫-এর রেগুলেশন ৩০-এর অধীনে সূচনা । উপরে উদ্ধৃত বিষয়ের রেফারেন্স সহ, আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে কোম্পানির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার তারাতলাতে অবস্থিত তার কারখানায় শ্রমিকদের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী অবসর স্কিম দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপের উপর কোন বস্তুগত প্রভাব নেই। অনুগ্রহ করে উপরের তথ্যগুলো রেকর্ডে নেওয়ার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।’
জানা গেছে,তারাতলার ব্রিটানিয়া কোম্পানীতে ৬ থেকে ১০ বছরের নীচে যারা চাকরি করেছেন,ভি আর এস এর আওতায় তাদেরকে ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে ২০০৪ সাল থেকে এই কোম্পানি অস্থায়ী কর্মী নেওয়া শুরু করে। বর্তমানে এই কোম্পানিতে ২৫০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। তাঁদেরকে ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে কোম্পানী । মাস দু’য়েক ধরে কারখানায় উৎপাদন প্রায় তলানিতে ঠেকেছিল । তখনই কর্মীরা আশঙ্কা করছিলেন যেকোনো সময় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে । অনান্য দিনের মত আজ কর্মীরা যথারীতি কাজে গেলে দেখেন কারখানার গেটে সাসপেশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলছে।
এদিকে ব্রিটানিয়া কোম্পানীর মত একটা পুরনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করেছে বিজেপি । বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য টুইট করেছেন,’ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানার আজ বন্ধ হওয়া একসময়ের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতার জন্য বিখ্যাত বাংলাকে গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে তুলে ধরে।ব্রিটানিয়া কারখানা, একসময় বাংলায় শিল্পের প্রাণশক্তির আলোকবর্তিকা ছিল, বাম শাসনকালে সিপিআই(এম)-এর ব্যাপক ‘ইউনিয়নবাজি’-এর কারণে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। টিএমসির নিরলস ‘তোলাবাজি’ ছিল কফিনে শেষ পেরেক, যা শেষ পর্যন্ত কারখানার মৃত্যু ঘটায় । টিএমসির চাঁদাবাজি এবং সিন্ডিকেটের কারণে ইতিমধ্যেই তীব্র বেকারত্বের মধ্যে নিমজ্জিত বাংলা, এখন কারখানা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে আরও ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, ব্যাপক ছাঁটাই শুরু করেছে।দুর্ভাগ্যবশত, বাংলার ভাগ্য এখন ‘ইউনিয়নবাজি’ এবং ‘তোলাবাজি’র জোড়া অভিশাপে আটকা পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন থেকে যায়, কবে বাংলা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে?’