এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৮ মার্চ : প্রায় ১৪ বছর আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার নহাটা গ্রামের একটি পুকুরের জল মারার সময় পাঁকের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল কষ্টিপাথরের ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তি । ওই গ্রামেই রয়েছে ‘কৃষ্ণ বলরাম আশ্রম’ । সেবাইত জয়দেব দাস সেই মূর্তি মাথায় করে এনে বিষ্ণুমূর্তিটি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন । ধুমধাম করে ভগবান শ্রীবিষ্ণুর পূজো হয় । মূর্তি উদ্ধারের দিনটিকে ভগবান বিষ্ণুর অভিষেক দিবস হিসাবে পালন করা হয় । প্রতিবছর এই দিনে উৎসব হয় । এই বিশেষ দিনে হাজার হাজার পুন্যার্থীর সমাগম হয় । আজ শুক্রবার ছিল সেই বিশেষ দিন । প্রচুর পূণ্যার্থীদের সমাগম হয়েছিল । বিকেল থেকে আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের । ভগবান বিষ্ণুর অভিষেক দিবসে মেতে ওঠে গোটা এলাকা ।
জানা গেছে,তিনদশক আগে পারিবারিক জমির উপর ‘কৃষ্ণ বলরাম আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন কাটোয়ার শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের নহাটা গ্রামের জয়দেব দাস । এক সন্ন্যাসী বৃন্দাবন থেকে জগন্নাথের দারুবিগ্রহ এনে সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন । তখন থেকে আশ্রমটি জগন্নাথ মন্দির হিসাবে পরিচিত হয় । সেই সময় নহাটা একটা প্রত্যন্ত গ্রাম ছিল । কিন্তু আজ থেকে প্রায় ১৪ বছর আগে বাংলার ১৪ চৈত্র গ্রামের দেওঘড়া পুকুর থেকে প্রায় দেড় ফুট উচ্চতার একটি কষ্টিপাথরের ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধারের পর থেকে নহাটা গ্রাম সনাতনী পূণ্যার্থীদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে । প্রথমে একটি ছোটখাট মন্দির ছিল । পরে মন্দিরের পরিসর বাড়ে । বাৎসরিক উৎসব ছাড়াও সারা বছর পূণ্যার্থীদের আগমন হতে শুরু করে । এদিকে বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধারের পর থেকেই জয়দেব দাস আশ্রমেই জীবনযাপন করেন। বর্তমানে তাঁর আশ্রমিক নাম জগৎপতি গৌড়রাজ দাস অধিকারী।
পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে নহাটা গ্রামে উদ্ধার হওয়া কষ্টিপাথরের ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তির বয়স আনুমানিক ১০০০ বছর । কিন্তু আইন অনুযায়ী মূর্তিটি সরকারি সংগ্রহশালায় থাকার কথা । এই বিষয়ে জয়দেব দাস বলেন,’বিষ্ণু মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করে পূজো করার অনুমতি দেওয়ার জন্য তৎকালীন প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম । প্রশাসন আমাদের সেই আবেদন স্বীকার করেছিলেন । তারপর মন্দিরে বিষ্ণু মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম আমরা ।আবির্ভাবের দিনটি পালন করে বাৎসরিক উৎসব হয়।’।