প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৯ অক্টৌবর :
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রেকে আত্মহত্যায়
প্ররোচনা দেবার অভিযোগ উঠলো প্রেমিকা সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে। মৃত ছাত্রের নাম সৈকত মাঝি (১৯) ।তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার কাঁশড়া গ্রামে । সৈকত দুর্গাপুরের বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়তো । গত ১৫ অক্টোবর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ । ছাত্রের এই মৃত্যুর ঘটনার জন্য দোষীদের শাস্তিদানের ব্যাপারে পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতের দ্বারস্থ হন ছাত্রের দাদা সৌমেন মাঝি। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য শুনে সিজেএম আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা জন্য জামালপুর থানার ওসি কে নির্দেশ দিয়েছেন ।
আদালতে সৌমেন মাঝি জানিয়েছেন,তাঁদের বাড়ি জামালপুর থানার কাঁশড়া গ্রামে। তাঁর ভাই সৈকত মাঝি দুর্গাপুরের বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্র ছিল।কাঁশড়া এলাকার এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের ভালবাসায় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল । এই সম্পর্কের বিষয়টি যুবতীর পরিবার মেনে নেয়নি।ঘটনার মাসদুই আগে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য যুবতীর পরিবার সৈকতকে নানা ভাবে হুমকি দেয়।এইসবের কারণে তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ভাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল।ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতো না ।উদাস থাকতো । সেই কারণে সব ভুলে গিয়ে ভালকরে পড়াশুনা করার জন্য তিনি তাঁর ভাইকে বলেন ।সৈকত তখন তাঁদের জানায় ,যুবতী অন্য একজনের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পের্ক লিপ্ত হয়েছে।তাই নানা কটুক্তি করে তাকে ভুলে যাওয়ার কথা যুবতী তাঁর ভাই সৈকত কে বলছে। এমনকি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে যুবতী সৈকতকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠায়। সৈকত দেখা করতে গেলে যুবতী ও তার নব্য প্রেমিক তাকে অপমান জনক কথাবার্তা বলে।তাতে সৈকত মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমন অবস্থার মধ্যেই গত ১৫ অক্টোবর রাত দেড়টা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় কয়েকজন তাঁদের বাড়িতে এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে।তারা তাঁর ভাইকে ডাকাডাকি করে। তা শুনে সৈকত বাইরে বেরিয়ে এলে তাকে তাঁরা পুনরায় কটূক্তি করে । এমনকি গুলি করে মেরে দেওয়ারও হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়। এরপর সৈকত ঘরে শুতে যায়।সৌমেন জানিয়েছেন,“পরেরদিন সকালে ঘরের সিলিং ফ্যানের হুকে লেপের কভার দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সৈকতকে ঝুলতে দেখা যায়। জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক সৈকতকে মৃত ঘোষণা করেন ।
মামলাকারী মৃতের দাদার আইনজীবী শর্মিষ্ঠা সামন্ত জানিয়েছেন, “ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার কথা থানায় জানানো হয়েছিল। থানা কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে ছাত্রের পরিবারকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারকেও জানানো হয় । তারপরও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে সিজেএম আদালতে মামলা করা হয়েছে। সিজেএম তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন“। জামালপুর থানার এক অফিসার বলেন, “সম্ভবত কেউ এই ধরণের অভিযোগ জানাতে থানায় আসেন নি।তবে আদালত নির্দেশ দিলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।