এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৪ ডিসেম্বর : ইসলামী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সমর্থনে মহম্মদ ইউনুস ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ হিন্দুদের জন্য কার্যত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে । শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে বাংলাদেশী মুসলিমদের জিহাদী মানসিকতা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে । চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতের আইনজীবীরা ঘোষণা করেছি যে চিন্ময় প্রভুকে যে আইনজীবী আইনি সহায়তা দেবে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে । এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে বসবাসকারী হিন্দুদের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মুসলিমরা । ইসকন মন্দির,লোকনাথ মন্দির, দুর্গা মন্দির , হিন্দু বাড়িঘর, দোকান পাট সব ভাঙচুর করা হয়েছে । আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘরের পালুই থেকে শুরু করে ঘর বাড়িতে । উপজেলা সদরের লাগোয়া মংলার গাও নামের হিন্দু গ্রামেও হামলা চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে । নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় এক হিন্দু চাষির বড় খড়ের পালুইয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টা নাগাদ আগুন ধরিয়ে দিয়ে ভস্মীভূত করে দেওয়া হয়েছে ।
অভ্রনীল হিন্দু নামে একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন,’সুনামগঞ্জের দোয়ারবাজারে ধর্মীয় অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে চরমপন্থী মুসলমানরা হিন্দুদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে! এ অবস্থায় এলাকায় এখন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে !’ মুসলিমদের এই প্রকার হামলার প্রতিক্রিয়ায় তিনি লিখেছেন,’একের পর এক হিন্দুদের উপর অত্যাচার হয়েই চলেছে। থামার নামই নিচ্ছে না। কোভিড ১৯ ভাইরাসের মত হয়ে উঠেছে ।’হিন্দু ভয়েস এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে,’এই মুহূর্তে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন রাস্তায় ইসলামপন্থী জনতা উন্মাদনা চালাচ্ছে। ইসলামপন্থীরা ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন/ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার আহ্বান জানাচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উন্মত্ত ইসলামী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে ।’
সোনারগাঁয়ের বারদীতে বিশ্ববরেণ্য যোগী পুরুষ শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর প্রাচীন মন্দির দখলের বার্তা দিয়ে মিজানুর রহমান নামে একজন ব্যক্তি ফেসবুকে পোস্ট করেছে,’আচ্ছা আপনি থাকছেন তো…সোনারগাঁয়ের বারদীর মাসজিদুল আকসা। বারদী আশ্রমের দখলদার হিন্দুদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে হবে ইনশাআল্লাহ।বারদী আশ্রমের ভিতরে ৩২ শতাংশ জায়গা মসজিদের নামে রয়েছে। কিন্তু তারা রাস্তা না দিয়ে চতুর্পাশে ওয়াশরুম এবং দেয়াল দিয়ে বেষ্টন করে রেখেছে। যার কারনে মসজিদের জায়গা পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে না। মসজিদও তৈরি করা যাচ্ছে না।’ সে একটা ম্যাপের মাধ্যমে মন্দিরটিকে চিহ্নিত করে লিখেছে, ‘সুতরাং বাংলাদেশের সকল তাওহীদি জনতা সহ সোনারগাঁয়ের সকল মুসলিম এক হয়ে আমাদের মাসজিদুল আকসার জায়গা উদ্ধার করতে হবে।
উপস্থিত থাকিবেন দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম।
তারিখ:- ৯/১২/২০২৪ ইং রোজ সোমবার।
স্থান:- বারদী বাজার।পোস্টটি শেয়ার করে সবাইকে জানিয়ে দিন।’
হিউম্যান রাইটস ফর বাংলাদেশী মাইনরিটিস এক্স-এ লিখেছে,’সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় চলছে সহিংসতার ভয়াবহ ঢেউ। ইসলামপন্থীরা সারাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক অপরাধ সংঘটনের জন্য প্রতিটি অজুহাত ব্যবহার করছে, যখন বিশ্ব নীরব দর্শক হয়ে আছে। স্থানীয় এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার গুজবের জেরে ইসকন মন্দির, লোকনাথ মন্দির, দুর্গা মন্দির, হিন্দু পরিবার এবং দোকানগুলিতে হামলার সূত্রপাত করেছে৷ মংলার গাও হিন্দু গ্রামও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে প্রাথমিক হামলার পর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, কিন্তু তারা ইসলামপন্থীদের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে কোনো শক্তি প্রয়োগ করেনি। তাদের নজরদারিতে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামসহ অনেক ক্ষেত্রে হামলার ঘটনা ঘটেছে।’ আরও লেখা হয়েছে,’দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ৫ই আগস্ট থেকে হাজার হাজার হামলার খবর পাওয়া গেছে। সরকার দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত আবেদন উপেক্ষা করে অস্বীকারের অবস্থায় রয়েছে। আমরা এই সহিংসতা বন্ধ করতে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই নৃশংসতা অব্যাহত থাকায় বিশ্ব নীরব থাকতে পারে না।’।