এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২১ মে : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে সোমবার অবসর নেওয়া চিত্ত রঞ্জন দাশ বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য ছিলেন এবং কর্তৃপক্ষ চাইলে ফের তিনি সাংগঠনিক কাজ করতে প্রস্তুত । কলকাতা হাইকোর্টের আর এক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । চলতি লোকসভা নির্বাচনে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থেকে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন । বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনিও জানিয়েছিলেন যে আগে থেকেই তিনি বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন । অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর ফের কলকাতা হাইকোর্টের ফের এক বিচারপতির হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগ সামনে এল ।
বিচারক ও বার কাউন্সিলের সদস্যদের উপস্থিতিতে হাইকোর্টে তার বিদায়ী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ বলেন,’আমি আজ বলতে চাই যে আমি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য ছিলাম । আমি আমার শৈশব থেকে আমার যৌবন জুড়ে আরএসএস-এর সাথে ছিলাম। আমি সংগঠন থেকে অনেক কিছু শিখেছি । সংগঠনের কাছ থেকে আমি সাহসী, ন্যায়পরায়ণ হতে শিখেছি, সকলের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে শিখেছি এবং সর্বোপরি, যেখানেই কাজ করি না কেন, দেশপ্রেমের অনুভূতি এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা নিয়ে কাজ করতে শিখেছি। সংগঠনের কাছে আমি অনেক ঋণী।’ অবসরের পর সংগঠনের হয়ে তিনি কাজ করতে প্রস্তুত বলেও জানান ।
বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ ওড়িশার বাসিন্দা । তিনি ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন । বিচারক হয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। প্রথমে ওড়িশায় বিভিন্ন আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । পরে তাঁকে ওড়িশা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) পদে নিয়োগ করা হয় । ওড়িশা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক পদে উন্নীত হয়েছিলেন ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হন ২০২২ সালের ২০ জুন । ওড়িশা হাইকোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টে বদলি হয়ে আসার পর তিনি ১৪ বছর বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ বলেন,’কাজের সুবাদে প্রায় ৩৭ বছর আরএসএস সংগঠন থেকে দূরে ছিলাম। আমি কোন কর্মজীবনের অগ্রগতির জন্য সংগঠনের সদস্যপদ ব্যবহার করিনি। কারণ এটা সংগঠনের নীতির পরিপন্থী । সে ধনী ব্যক্তি হোক, কমিউনিস্ট হোক বা ভারতীয় জনতা পার্টি, কংগ্রেস বা তৃণমূল কংগ্রেসের হোক,সকলের সাথে সমান আচরণ করেছি । আমার কাছে সবাই সমান, কারো প্রতি আমার কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখাইনি ।’।