প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ জুন : মুখমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র,কার্তুজ ও গোলাবারুদ উদ্ধারে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে পুলিশ । তার পর থেকে কোথাও পুলিশ ,আবার কোথাও এসটিএফের জালে ধরা পড়ছে অস্ত্র কারবারীরা। তবে এ ক্ষেত্রে বারে বারে জড়িয়ে যাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার নাম। গত মে মাসের শেষের দিকে কলকাতার ধর্মতলায় ১২০ রাউণ্ড কার্তুজ সহ এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের যুবক রামকৃষ্ণ মাজি। এরপর হাতে গোনা কয়েকটা দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতার ময়দান এলাকায় ১০ রাউণ্ড কার্তুজ সহ এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে শাহিদুল্লা মল্লিক নামে এক ব্যক্তি। তদন্তে উঠে এসেছে এই শাহিদুল্লা পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা। তদন্তকারীরা তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,শাহিদুল্লা মল্লিকের বাড়ি মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম অঞ্চলের মাধপুর গ্রামে। আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে তাঁর নাম অনেকদিন আগেই জড়িয়েছে।এছাড়াও ডাকাতি অভিযোগে মামলাও তাঁর নামে রয়েছে। যদিও শাহিদুল্লার ভাই সাইফুদ্দিন মল্লিকের দাবি,তাঁর দাদা অনেক দিন আগেই খারাপ কাজ ছেড়ে দিয়েছে।এখন শাহিদুল্লা কোন খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল না।রুটি রুজি রোজগারের জন্য তিনি বাইরে চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁকে পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। শাহিদুল্লা গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী বানেরা বিবি কলকাতা রওনা দিয়েছেন ।
পরিবার সদস্যদের দাবি অনুযায়ী, শাহিদুল্লার কিছু জমিজমাও রয়েছে। বছর পঞ্চাশের শাহিদুল্লা আগে চাষাবাদ করতেন।তাঁর ছেলে এখন চাষাবাদ দেখেন। শাহিদুল্লা বছর দু’য়েক আগে ভিনরাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজে চলে যান। বছর খানেক আগে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি বাড়ি চলে আসেন। তারপর থেকে তিনি আর বাইরে যাননি। বাড়িতেই ছিলেন।
এদিকে পরিবার সদস্যরা শাহিদুল্লাকে নিরপরাধ বলে দাবি করলেও পুলিশ অবশ্য তা মানতে চায়নি। এনিয়ে পুলিশের বক্তব্য,শাহিদুল্লার বিরুদ্ধে আগেও আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ২০২১ সালে এবং ২০২২ সালে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। ওইসব মামলায় জামিন পাওয়ার পর ২০২৩ সালে শাহিদুল্লাকে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। ওই ডাকাতির মামলায় জামিন পেয়েই শাহিদুল্লা ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয় । সেখান থেকে ফিরে আসার বছর খানেকের মধ্যেই শাহিদুল্লা ফের এসটিএফের হাতে ধরা পড়লো।
এসটিএফ সূত্রে খবর ,গত মাসের শেষের দিকে কলকাতার ধর্মতলায় শতাধিক কার্তজ সহ এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে কেতুগ্রামের কুলুন গ্রামের বাসিন্দা যুবক রামকৃষ্ণ মাজি। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে তদন্তকারীরা শাহিদুল্লা মল্লিকের আসল স্বরূপ জানতে পারে।এরপর গোপন সূত্রে মাধমে খবর পেয়ে এসটিএফ মঙ্গলবার কলকাতায় ময়দান এলাকায় অভিযান চালিয়ে পিস্তলের ১০ টি কার্তুজসহ শাহিদুল্লাকে পাকড়াও করে। কার্তুজ গুলি বিহারের মুঙ্গের থেকেই আনা হয়েছিল বলে এসটিএফ জানতে পেরেছে।।

