প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ অক্টোবর : ফের গণধর্ষণ । এবার ঘটনাস্থল শহর বর্ধমান। বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার হলেন এক যুবতী । তাঁকে মারধর এমনকি হেরোইন খাওয়ার জন্যেও ধর্ষণে জড়িতরা চাপ দেয়। দীপাবলীর প্রক্কালে এমন অপরাধের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ মূল অভিযুক্ত সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে । অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি করেছে নির্যাতিতা তরুণী ও তাঁর পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অপরাধিদের নাম শেখ সোলেমান ওরফে সোহেল,রোহিত মির্জা, শেখ সিরাজ,শেখ আসগর ওরফে মনু ও মহম্মদ আরিফ। এরা বর্ধমান থানা অধীন বিজয়রামের ক্যানেলপাড়, মসজিদতলা, হটুদেওয়ান পীরতলা ও শোলাপুর এলাকার বাসিন্দা ।পুলিশ বুধবার ভোররাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। নির্যাতিতার পরনের পোশাক বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি পুলিশ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যুবতীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছে। পুলিশ এদিনই ধৃতদের পেশ করে বর্ধমান সিজেএম আদালতে। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের সাতদিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। সিজেএম সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ির নির্যাতিতা যুবতীর বাড়ি বর্ধমান থানা এলাকায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি তাঁর বন্ধুর সঙ্গে পিৎজা খেতে বের হন । পিৎজা খেয়ে রাত সাড়ে ৮টা–৯টা নাগাদ বিজয়রামের পথ ধরে তাঁরা হাঁটছিলেন। সেসময় আচমকা পাঁচজন যুবক তাঁদের সামনে হাজির হয়। যুবকরা জোর করে তাঁদের পথ আটকায় । টাকারও দাবি করে। তা দিতে রাজি না হলে জোর করে যুবতীর কাছে থাকা ৬০০০ টাকা যুবকরা কেড়ে নেয়। সাথে সাথে যুবতীর বন্ধুর ফোনও তারা কেড়ে নেয়।এরপর যুবকদের একজন জোর করে যুবতীকে রাস্তার পাশে একটি নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে যায়। ওই সময় অপর দু’জন যুবতীর বন্ধুকে জোর করে আটকে রাখে। এরপর সোলেমান যুবতীকে ধর্ষণ করে। আর সোলমানের দুই সঙ্গী যুবতীর শ্লীলতাহানি করে। যুবতী বাধা দিতে গেলে তারা যুবতীকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করে।পরে বাকিরা এসে যুবতীকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে।এমনকি ধর্ষণে জড়িতরা যুবতীকে হেরোইন খাওয়ার জন্য জোর করে। সেখান থেকে কোনওরকমে নিজেকে মুক্ত করে বন্ধুর সঙ্গে টোটোয় চেপে চলে আসেন ওই যুবতী।তিনি ওই রাতেই গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বুধবার যুবতী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাঁর বন্ধুর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর জন্য আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।।