প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ সেপ্টেম্বর : আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা ডাক্তার কে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর থেকে বারে বারে উঠেছে ’থ্রেট কালচারের’ অভিযোগ।দিন যত গড়াচ্ছে ততই প্রকাশ্য আসছে বঙ্গের স্বাস্থ্য শিক্ষায় প্রভাব ফেলা থ্রেট কালচারের নানা বিভিশিকা ময় কাহিিনী ।আর ঠিক এমন আবহেই সামনে এসেছে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর মেধাবী ছাত্র ডাঃ মোবারক হোসেনের মৃত্যুরহস্য । যে রহস্য তিন বছর ধরে রহসের অন্ধকারেই ঢাকা পড়ে রয়েছে। ছেলে মোবারকের মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠতে না পারা বাবা শেখ হাজিফুল ইসলাম আজও মনে করেন ,তাঁর ছেলের সঙ্গে খারাপ’ই কিছু হয়েছিল। রহস্য উদঘাটনে চিকিৎসক সংগঠন মোবারক হোসেনের পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।
মোবারক হোসেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের তিনতলা থেকে নিচে পড়ে তার মৃত্যু হয়। মোবারকের এমন মৃত্য মেনে নিতে পারে নি তাঁর পরিবার। তাঁরা ঘটনার বিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডাঃ মোবারক হোসেনের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পরিবারের।ঘটনার পর থেকে তিন বছর কেটে গেলেও ছেলের মৃত্যুর বিচার পান নি বাবা শেখ হাজিফুল ইসলাম।তাই জাস্টিসের দাবিতে আজও তিনি অনড় রয়েছেন।পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের দাবিও জানাচ্ছেন ডাঃ মোবারক হোসেনের পরিবার।আরজি করের অভয়ার বাবা মায়ের পাশে থাকার মতন করেই ডাঃ মোবারক হোসেনের বাবা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে চিকিৎসক সংগটন।
মোবারক হসেনের বাবা শুক্রবার বলেন,’ছেলের সঙ্গে কি ঘটনা ঘটেছে জানিনা । তবে ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলেই আমি মনে করি ।আমার পরিবারও তাই মনে করে । একটা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে যাওয়া ছেলে খুন হল, তবুও আজ পর্যন্ত কোন তদন্ত হয়নি। এমনকি ঘটনা ঘটার পরেও বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো খবর পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আমরা আত্মীয়-স্বজন এবং ছেলের বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে ঘটনার খবর পেরেছিলাম,মোবারক আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের আই সি ইউ তে ভর্তি আছে। তারপর আমরা গিয়ে দেখি ছেলের মৃতদেহ।এতবড় ঘটনার পরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে এসে কোন কথাও বলেনি। আমরা এফ আই আর করার জন্য বর্ধমান থানায় গিয়েছিলাম । কিন্তু থানা আমাদের অভিযোগ নেয়নি।আমাদেরকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে গিয়ে কথা বলার উপদেশ টুকু দিয়ে দায় সারে ।পুলিশ এবং মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বোঝয়, মোবারক নাকি অবস্থায় এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে।আমি তখনও বলেছিলাম আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে, আজও তাই বলছি ।আমি জাস্টিস চাই।
এই প্রসঙ্গে ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন,’এই ঘটনারও তদন্ত হওয়া উচিত। ওই পরিবার যদি বিচার চায় তাদেরকে আমরা আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।এই ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত আছে, কোন সিণ্ডিকেট রাজ কাজ করেছে কি না, সব পরিষ্কার হওয়া উচিত।’ মোবারকের প্রতিবেশীরা জানান, মোবারক ছোট থেকেই মেধাবী ছিল। খুব মিশুকেও ছিল। এমন একটি ছেলে হঠাৎ’ই আত্মহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত কেন ,এটা কারুর কাছেই বিশ্বাস যোগ্য নয় ।
মোবারককে খুন করা হয়েছে বলে তখন বার বার দাবি করেছিল তার বাবা শেখ হাজিফুল ইসলাম। যেভাবে উপর থেকে মোবারকের দেহটি নিচে পড়েছিল তাতেও সন্দেহের অবকাশ ছিল। ঘটনার পর ফরেন্সিক টিম এসেছিল। ঘটনার পুননির্মাণ করা হয়। কিন্তু আজও সুবিচার মেলেনি ।।