প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ অক্টোবর : সরকারী হাসপাতাল থেকে ফের শিশু চুরি! এবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু চুরির অভিযোগ উঠলো। ১৮ দিনের এক শিশু পুত্র চুরি হয়ে যাওয়া নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ব্যাপক হুলস্থুল পড়ে যায় বর্ধমান হাসপাতালে। শিশু পুত্রকে চুরির ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার খোঁজ শুরু করেছে।
বীরভূমের কীর্ণাহারের বলরামপুরে বাড়ি শিশুর পরিবারের ।শরীর খারাপ হওয়ায় ১৮ দিনের শিশু পুত্রকে নিয়ে শিশুটির মা সেলেফা খাতুন ও তাঁর স্বামী সুজল শেখ এদিন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর শিশু বিভাগে আসেন । সঙ্গে ছিলেন সেলেফার মা হামিদা বিবি।সেলেফার নিজেরও এদিন হাসপাতালে প্রসূতি চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করনোর কথা ছিল।
সেলেফা খাতুন জানিয়েছেন,তিনি তাঁর শিশু পুত্রকে এদিন বর্ধমান হাসপাতালের আউটডোরে শিশু চিকিৎসকে দেখাত আসেন ।সেখানে শিশু চিকিৎসককে দেখানো হয়ে যাওয়ায় পর তাঁরও ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। তাই তিনি তাঁর শিশু পুত্রকে নিয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের বহিঃবিভাগের বারান্দায় বসেছিলেন। সঙ্গে তাঁর মা হামিদা বিবিও ছিলেন।সেলেফার স্বামী সুজল শেখ হাসপাতালের বাইরে ওষুধের দোকানে যান ছেলের ওষুধ কিনতে। মেয়ের কাছে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর তাঁর মা ডাক্তার দেখাতে যান। সেলেফা খাতুন, জানান ,ওই সময়েই হলুদ রঙের চুড়িদার পরিহিতা অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলা তাঁর কাছে এসে তাঁর শিশুপুত্রকে আদর করতে থাকে।খানিক পর তাঁর শিশুপুত্রকে কোলেও নেন ওই মহিলা। এর পর আচমকাই তাঁর শিশু পুত্রকে কোলে নিয়ে ওই মহিলা উধাও হয়ে যান।ছেলে না পেয়ে সেলেফা খাতুন হাসপাতালেই কান্নাকাটি জুড়ে দেন ।
এই ঘটনা জানাতে পেরেই ডাক্তার দেখানো ফেলে রেখে হামিদা বিবি তড়িঘড়ি তাঁর মেয়ের কাছে ছুটে আসেন।মেয়ের কাছ থেকে গোটা ঘটনা জানার পর তিনি তাঁর জামাই সুজল সেখকে ফোন করে সব জানান। সুজল শেখ সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তে হাসপাতাল চত্বর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। খবর পেয়ে ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) দেবাশীষ চক্রবর্তী ও বর্ধমান থানার আইসি দিবেন্দু দাস হাসপাতালে পৌছান।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় সুরজ সাহানা বলেন,’এভাবে দিনে দুপুরে ভিড়ে ঠাসা হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি হওয়া সত্যিই উদ্বেগের । হাসপাতালে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।”যদিও হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “ঘটনা সবিস্তার আমার জানা নেই।আমি খোঁজ নিচ্ছি।’ আর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হওয়ার কথা পুলিশ কর্তারা জানালেও সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু পুত্রটির হদিশ মেলার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।।