প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ আগষ্ট : বর্ধমান পৌরসভার উপ-প্রশাসক পদে সদ্য নিযুক্ত হওয়া আইনুল হককে খুনি’ আখ্যা দিয়ে এবার আন্দেলনে নামলো তৃণমূলের কর্মীরা । “সিপিএম এর হার্মাদ-বিজেপির দালাল- শরদিন্দু কোনার ও আমজাদের ’খুনি’আইনুল হক দূর হাটো“ এমন সবকিছু লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে শনিবার শহর বর্ধমানের রাজপথে নেমে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কর্মীরা । তবে শুধু এমন ব্যানার হাতে বিক্ষোভই নয় । দলের পতাকা ছাড়াই শহর বর্ধমানের প্রায় ৪০টি জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা পথ অবরোধ করেও বিক্ষোভ দেখায় ।তার মধ্যে কোথাও কোথাও আবার রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ । সেই সব বিক্ষোভ অবরোধের জেরে এদিন বিকালে ঘন্টা খানেকের জন্য শহর বর্ধমান কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় ।
বাম আমলে বর্ধমান পৌরসভার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা ছিলেন সিপিএম নেতা আইনুল হক।তৃণমূল কংগ্রেসের যাবতীয় আন্দোলন তখন ছিল তাঁরই বিরুদ্ধে । রাজ্যে পালাবদলের কয়েক বছর পর সিপিএম থেকে বহিস্কৃত হয়ে আইনুল হক প্রথমে বিজেপিতে নাম লেখান । পরে বিধানসভা ভোটের আগে তিনি যোগদেন তৃণমূল কংগ্রেসে ।প্রায় তিন বছর পর বর্ধমান পৌরসভার জন্য গঠিত হয় প্রশাসক মণ্ডলী। সেই প্রশাসক মণ্ডলীতে উপ-প্রশাসক হিসাবে আইনুল হকের নাম সামনে আসতেই গত মঙ্গলবার থেকে ক্ষোভ বিক্ষোভ জারি রয়েছে শহর বর্ধমানের তৃণমূল শিবিরে । শনিবার সেই ক্ষোভ বিক্ষোভ চরমে পৌছালো ।
উপ-প্রশাসক পদ থেকে আইনুল হকের অপসারণের দাবিতে বিগত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে বর্ধমান পৌরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডেই।বিক্ষোভকারীরা সকলেই বর্ধমান দক্ষিনের বিধায়ক খোকন দাসের অনুগামী বলেই পরিচিত। উপ – প্রশাসক পদ থেকে আইনুল হককে সরানোর দাবিতে এদিন বিকালে বর্ধমান পৌরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডেই বিক্ষোভ চলে। বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ ও বিক্ষোভের পাশাপাশি জাতীয় সড়কও অবরোধ করা হয়।শহরের রথতলায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। পাশাপাশি জিটি রোডের কার্জনগেট ও পুলিশ লাইনে পথ অবরোধ করে রেখে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন । বিক্ষোভকারীরা এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘১৯৯৮ সালের ১২ জুলাই খুন হন বর্ধমান শহরের লক্ষীপুর নিবাসী বাম বিরোধী শিক্ষক শরদিন্দু কোনার ।এছাড়াও তৎকালীন সিপিএম নেতা আইনুল হকের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য নিখোঁজ হন আমজাদ শেখ ।’
বিধায়ক খোকন দাসের ঘনিষ্ট তৃণমূল নেতা আব্দুল রব দাবি করেন এই সব অপরাধের মূল কান্ডারী ছিলেন আইনুল হক । বিক্ষোভে সামিল সকলেই জানান ,আইনুল হক সিপিএমের আমলে তৃণমূল কর্মীদের উপর অমানুষিক অত্যাচার চালিয়েছে। সেই আইনুল হককে বর্ধমান পৌরসভার উপ-প্রসাসক পদ থেকে না সরানো পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে ।।