প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ অক্টোবর : আরজি কর কাণ্ড নিয়ে চলা প্রতিবাদের আবহের মধ্যেই যমজ সন্তান প্রসবের বিরল দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।২৪ ঘন্টার সময়ের ব্যবধানে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম নিল ১৮ টি জমজ শিশু।এর আগে কোনো হাসপাতালে এমন নজির তৈরি হয়েছিল কি না তা চিকিৎসকদের কাছেও আজানা রয়ে আছে ।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বৃহস্পতিবার জানান,’৯ জন প্রসূতি’ই যমজ শিশু সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।শিশুদের মধ্যে ১১ জন কন্যসন্তান আর ৭ জন পুত্রসন্তান। সন্তানের জন্ম দেওয়া সব মা ও শিশু সুস্থ আছে। চারজনের ওজন কম থাকায় তাদের ’এন আই সি ইউতে’ রাখা হলেও তারা ভালই আছে।’ সুপার।আরো জানান,’জমজ শিশুর জন্ম সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়।হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররাও এই প্রসব প্রক্রিয়ায় চাপ সামলেছেন।
বর্ধমান হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগের প্রধান মলয় সরকার জানান,’রেফারেল হাসপাতাল হওয়ায় এখানে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ প্রসব করাতে হয়।পরিসংখ্যায়নে দেখা যাচ্ছে, ৮০ জন প্রসূতির মধ্যে একজনের জমজ শিশু জন্মায়। এক্ষেত্রে একটি ছাড়া সব প্রসব হয়েছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে’। মলয় সরকার এও জানান, ‘প্রসূতি চিকিৎসক, অজ্ঞান করার ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার, নার্স সহ অন্যান্য কর্মীরা ৯ প্রসূতির জমজ সন্নান প্রসব করানোর চ্যালেঞ্জ দারুনভাবে নিয়েছেন’।অপর চিকিৎসক সুপ্রতিক বসু জানান,’ সদ্যজাতদের ওজন ২ কেজি থেকে ২ কেজি ২০০ ওজন রয়েছে ।প্রসূতিদের কারুর বাড়ি বাঁকুড়া কারুর হুগলি ও নদীয়া।পূর্ব বর্ধমান জেলার দু’জন রয়েছেন। শুধুমাত্র একজনের বাড়ি ঝাড়গ্রামে।
লক্ষ্মী পুজোর তিথির মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানের রায়নার কাইতির বাসিন্দা কৃষ্ণা নায়েকের পরিবার জোড়া কন্যা সন্তান লাভ করেছে। কৃষ্ণা নায়েক জানান,তিনি যমজ কন্যা সন্তানের একজনের নাম লক্ষ্মী,আর একজনের নাম সরস্বতী রেখেছেন। অপর প্রসূতির আত্মীয় শিখা সাঁতরা বলেন,আমার ভাগ্নীও জমজ শিশু সন্তানের জন্ম দিয়েছে।এই দুই প্রসুতির আত্মীয়রা নির্দিধায় জানান,বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা খুব ভাল। ডাক্তারবাবুরাও খুব আন্তরিক।জমজ সন্তানের জন্ম নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে বর্ধমান হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরা আমাদের শাহস যুগিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা এখন দুশ্চিন্তা মুক্ত। জোড়া সন্তান নিয়ে হাসি মুখেই বাড়ি ফিরবো ।।