এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ জুলাই : ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থেকে বিএসএফ ক্যাম্প এখনই না সরানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বিএসএফের আধিকারিকদের থাকার নির্দেশ দিল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের এই নির্দেশের খবর দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের হিন্দুরা আমাকে বারবার মেসেজ করে বলছিল যে বিএসএফ চলে গেলে জিহাদিরা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে তারা আজ কলকাতা হাইকোর্ট বিএসএফ মোতায়েনের সময়সীমা বাড়িয়েছে ।’
তিনি এক্স-এ আরও লিখেছেন,’মুর্শিদাবাদ দাঙ্গা বিষয়ে আমার দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায়, মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় ডিভিশন বেঞ্চ পূর্ববর্তী সময় দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা (অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ইত্যাদি) অব্যাহত রাখার অনুমতি দিয়েছেন। মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের কারণেই মুর্শিদাবাদ জেলার বহু হিন্দুর জীবন রক্ষা পেয়েছে। মাননীয় আদালত মুর্শিদাবাদ জেলায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প স্থাপনের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছেন। উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের সম্ভাবনাও নিরলসভাবে খুঁজে চলেছেন সম্মাননীয় বিচারপতি দ্বয়। আমি এই গুরুত্বপূর্ণ আদেশকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই এবং সাংবিধানিক বিধিকে রক্ষা করা ও সমুন্নত রাখার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানো হয় মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও সামসেরগঞ্জে । বেছে বেছে হিন্দুদের ঘরবাড়ি, দোকান লুটপাট-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় । গোয়াল থেকে লুট করা হয় গবাদি পশুও । হরগোবিন্দ দাস ও তার ছেলে চন্দন দাসকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে পশু কাটার ছুরি দিয়ে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় । আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ভাগিরথী নদী পেরিয়ে মালদা জেলার একটি গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেয় হিন্দু পরিবারগুলি ।
সাম্প্রদায়িক হিংসা কবলিত মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে সামসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। তারপর দু’দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সময়সীমা বাড়ানো হয় ।।

