এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ ও ঢাকা,২৩ জুলাই : ভারতের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও বাংলাদেশে পাল্লা দিয়ে চলছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে এক হিন্দু যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুনের খবর পাওয়া গেছে । এছাড়া তিন হিন্দু তরুনীকে অপহরণের পর ধর্মান্তরিত এবং জোর করে অপহরণকারীদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে । অন্যদিকে বাংলাদেশে দূর্গা প্রতিমা ভাঙচুর ও বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামি লিগের এক হিন্দু নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে ।
জানা গেছে,পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রহিম ইয়ার খান (Rahim Yar Khan) এলাকার বাসিন্দা ২০ বছর বয়সী হিন্দু যুবক আকাশ কুমার ভেল (Akash Kumar Bheel) কয়েকদিন ধরেই নিখোঁজ ছিলেন । শনিবার ওই যুবকের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহটি গ্রামের পাশে আখ খেতের মধ্যে পড়ে থাকতে থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা । যুবকের ডান দিকের ঘাড়ে গভীর ক্ষত দেখতে পাওয়া যায় । প্রাথমিকভাবে আকমল ভাট্টি(Akmal Bhatti) নামে এক মুসলিম যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । তবে খুনের কারন এখনো স্পষ্ট নয় ।
এদিকে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের ধারকি (Dharki) এলাকায় তিন হিন্দু বোন চাঁদনি(Chandni) রোশনি (Roshni), পরমেশ কুমারীকে (Parmesh Kumari) অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে । পরে স্থানীয় মুসলিম ধর্মগুরু পীর জাভেদ আহমেদ কাদরী (Pir Javed Ahmed Qadri) ওই তিন মেয়েকে ধর্মান্তরিত করে অপহরণকারীদের সঙ্গেই বিয়ে করতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ । এছাড়া পাকিস্তানের সিন্ধুর ঘাউশপুর (Ghoushpur) জেলার ঘাড়হি বক্স ওগাহি (Garhi Bux oghahi) গ্রামের হিন্দুদের মন্দির ও ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে পাঁচজন অজ্ঞাত দুষ্কৃতি ছোট অস্ত্র এবং মর্টার শেল দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে । ভাগ্যক্রমে মর্টার শেল বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি ।
এছাড়া পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বদিন (Badin) এলাকার প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তি নাদিম পাঠান (Nadeem Pathan)- এর আপত্তির কারনে শান্তি কোলহি (Shanti Kolhi) নামে এক হিন্দু যুবকের দেহ এলাকার শ্মশানে দাহ করতে পারেনি পরিবারের লোকজন । বর্তমানে বদিন প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছে পরিবার পরিজন । জানা গেছে,পাকিস্তানের হায়দ্রাবাদে চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান বছর পঁচিশের যুবক শান্তি কোলহি ।
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশেও হিন্দুদের উপর আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে । জানা গেছে, বাংলাদেশের নিয়ামতপুরে একটি দুর্গা মন্দিরে হামলা হয়েছে । দেবী দূর্গার প্রতিমা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় জিহাদিরা । ।এখন পর্যন্ত খলিল মিয়া(Khalil Miya) নামে এক জিহাদিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । উল্লেখ্য,চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে মাত্র ২ দিনে ১৪ হিন্দু মন্দির ভাংচুরের ঘটনা ঘটে ।
এছাড়া বাংলাদেশের পিরোজপুরে পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুমুরিয়া এলাকার বাসিন্দা রাজা সিকদারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে । বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি রাজা সিকদারের বৃদ্ধ পঙ্গু মা-বাবাকে মারধর পর্যন্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ । জহর লাল সিকদার (৬৫) ও মা মিনা রানি সিকদার (৫৫) বর্তমানে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,শনিবার রাত ৮ টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ সজলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রাজা সিকদারকে খুঁজতে তাদের বাড়িতে আসে । সেই সময় রাজা সিকদারকে বাড়িতে না পেয়ে তারা বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি পরিবারের লোকজনদের ব্যাপক মারধর করে । চলে যাওয়ার আগে দুই দিনের মধ্যে দেশ ছড়ে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসে হামলাকারীরা ।।